লালখানবাজারে মধ্যরাতে ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩, নেপথ্যে আওয়ামী লীগের সভায় হামলা

চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজারের মতিঝর্না এলাকায় সংঘর্ষ চলছে।

সোমবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় বিবাদমান কাউন্সিলর বেলাল গ্রুপ ও আমজাদ হাজারী গ্রুপের মধ্যকার এই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আরিফ নামে একজনসহ মোট ৩ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়।

সংঘর্ষের বিষয়টি স্বীকার করে খুলশী থানা পুলিশ জানায়, নিজেদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।

তবে কোন গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে তা বলতে রাজি হয়নি খুলশি থানা পুলিশ।

এর আগে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবারের (১৭ মে) আলোচনা সভায় দাওয়াত না পাওয়ায় সন্ত্রাসীবাহিনী পাঠিয়ে সভা পণ্ড করার হুমকি দেন স্থানীয় কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল।

মঙ্গলবার লালখানবাজার ওয়ার্ডের ‘খ’ ইউনিট আওয়ামী লীগ এই সভার আয়োজন করে।

এর আগে সোমবার (১৬ মে) সভা সফল করার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে ইউনিটের নেতারা। কিন্তু আলোচনা সভায় স্থানীয় কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল দাওয়াত না পেয়ে ক্ষেপে যান।

প্রস্তুতি সভায় সালাউদ্দীন লাভলুর নেতৃত্বে ২০-৩০ জন সভা না করতে হুমকি দেয়। সালাউদ্দিন ছাত্রনেতা সুদীপ্ত ও আবীর হত্যা মামলার অন্যতম আসামি।

‘খ’ ইউনিটের নেতাদের দাবি, ছোট পরিসরে শুধুমাত্র ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়েই শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ওপর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে শুধুমাত্র ইউনিট ব্যতীত অন্য কোনো নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। আর এতেই ক্ষুদ্ধ হয়ে কর্মী পাঠিয়ে অনুষ্ঠান পণ্ড করার হুমকি দেন কাউন্সিলর।

এ ব্যাপারে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ‘খ’ ইউনিটের সভাপতি এসএম ইব্রাহিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সোমবার রাত ৮টার দিকে আমাদের প্রস্তুতি সভার মিটিং ছিল। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাউন্সিলর বেলাল আমাকে ফোন করে জানতে চান−কালকের অনুষ্ঠানে তাকে কেন দাওয়াত দেওয়া হয়নি? উত্তরে আমি বলি, এটা ছোট পরিসরে হচ্ছে তাই কাউকেই দাওয়াত দেওয়া হয়নি।’

কিন্তু কাউন্সিলর বেলাল তাকে দাওয়াত না দিলে অনুষ্ঠান হতে দেবেন না বলে জানান। এজন্য রাতে ২০-৩০ জন কর্মী বাহিনী পাঠিয়ে আমাদের প্রস্তুতি সভার মিটিংটি পণ্ড করে দেয়। সেইসঙ্গে আগামীকাল সভা না করারও হুমকি দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘সালাউদ্দীন লাভলুর নেতৃত্বে তপন সিং বিশ্বজিৎ চৌধুরী, আলমগীর হোসেন, জাকির মাসুদ রানা, নাহিদ হোসেন রাসেল, মোহন হাসান, শরীফ ওরফে সুন্দরী শরীফ, কাউসার ওরফে মোটা কাউসারসহ ২০ থেকে ৩০ জনের একটি গ্রুপ এসে হুমকি দিয়ে যায়। আর যারা হুমকি দিতে এসেছেন তারা সবাই কাউন্সিলর বেলালের অনুসারী।’

তবে ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান কাউন্সিলর বেলাল। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, ‘খ’ ইউনিট আওয়ামী লীগের কোনো বৈধ কমিটি নেই। আর বৈধ কমিটি না থাকলে আলোচনা সভার কথা আসবে কোত্থেকে? এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না।’

তবে কাউন্সিলরের বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে ইউনিট সভাপতি বলেন, ‘তিনি সবই জেনে না জানার অভিনয় করছেন। আমরা আগামীকাল ইস্পাহানি মোড়ে সমেবত হয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যোগ দেব। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি ইস্পাহানির মোড়েও আমাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!