লাখ টাকা ঘুষ খেয়ে পেট ভরানো ভ্যাট কর্মকর্তা নাজমুলের ‘শাস্তিমূলক’ বদলি

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সার্কেলের ভ্যাট রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর উক্ত কর্মকর্তাকে বান্দরবানের লামায় বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও ঘুষ নেয়ার বিষয় অস্বীকার করে চলেছেন তিনি।

জানা যায়, আগ্রাবাদস্থ লাকী প্লাজার বনফুলের শাখা থেকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে ১ লাখ টাকা নেন ভ্যাট রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন। অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল দাবি করেন, ভ্যাট আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হলে ঘুষের অভিযোগ তুলছেন বনফুলের ওই শাখার মালিক।

জানা গেছে, নগরের আগ্রাবাদ মোড়স্থ লাকি প্লাজার নিচ তলায় বনফুল ডিলার (আউটলেট) মালিক শাহ আলমের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা ঘুষ নেন আগ্রাবাদ সার্কেলের ভ্যাট কর্মকর্তা নাজমুল। উক্ত টাকা না দিলে ভ্যাট ফাঁকির মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বনফুলের ডিলারকে। ফলে বাধ্য হয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাজমুলকে এক লক্ষ টাকা দেন শাহ আলম।

বনফুলের ওই শাখার ম্যানেজারের হাত থেকে উক্ত টাকা গ্রহণ করেন নাজমুল। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বনফুলের ওই শাখার মালিক মোহাম্মদ শাহ আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে অভিযোগ করে বলেন, ‘করোনার কারণে গত এক বছর কোন ব্যবসাই করতে পারিনি আমরা। এরপরও ভ্যাট নেওয়ার জন্য প্রচুর চাপ সৃষ্টি করছে কর্মকর্তারা। কিন্তু এক লক্ষ টাকা না দিলে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়। ফলে আমার ম্যানেজারের মাধ্যমে নাজমুলকে একলক্ষ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার দুঃখ হলো টাকাগুলো সরকার পেলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু আমি মামলা থেকে বাঁচতে তাকে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছি।’

এদিকে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চাইলে কাস্টমস ভ্যাট এক্সাইজ আগ্রাবাদ সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি সত্য নয়। ভ্যাট আদায়ের জন্য তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি এটা সত্য।’

বনফুলকে নোটিশ দেওয়ার পরও মামলা করা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি চুপ থাকেন। সূত্রমতে, এক লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি জানাজানি হলে আগ্রাবাদ সার্কেল থেকে বান্দরবানের লামায় বদলী করা হয়েছে নাজমুলকে। তবে, চট্টগ্রামের ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলছেন, এটা স্বাভাবিক বদলি।

জানতে চাইলে আকবর হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। কিন্তু লিখিত কোনো অবিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেল তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!