লকডাউন শিথিল, স্বাস্থ্যবিধি না মানার হিড়িকে ঝুঁকির মুখে কক্সবাজার

মুখে মাস্ক পরতেও অনেকের আপত্তি। মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। সব কিছু যেন স্বাভাবিক। বিশেষ করে লকডাউল শিথিল হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা বেড়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। ফলে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।

প্রতিদিনই কক্সবাজার শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবুও হুঁশ নেই অনেকের। লকডাউন শিথিলের পর শহরের সড়ক ও উপসড়কে লোকজনের পাশাপাশি বেড়েছে যানবাহন চলাচল। লোকে লোকারণ্য প্রতিটি স্থান। কিন্তু বেশিরভাগই মানছে না ন্যুনতম স্বাস্থ্যবিধি।

সোমবার (৬ জুলাই) সকালে সরেজমিনে কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীর পাড়, হাসপাতাল সড়ক, বার্মিজ মার্কেট, বড় বাজার, কালুর দোকান, বাজারঘাটা, পুরাতন পান বাজার, ভোলাবাবুর পেট্রোল পাম্প এলাকায় ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।

অনেকেই মনে করছেন লকডাউন শিথিল হওয়ার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে গেছে। এমন ধারনার কারণে সামাজিক দূরত্ব মানছে না ওরা। বেশিরভাগ লোকজনের মুখে নেই মাস্ক। অনেকে মুখে মাস্ক না পরে গলায় ঝুঁলিয়ে রেখেছেন। জিজ্ঞেস করলে নানা অজুহাত খাড়া করেন তারা। অথচ মাস্ক ব্যবহার না করার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত জরিমানা ও সতর্ক করে যাচ্ছেন। তারপরও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

অনেক দোকানি গ্লাভস, মাস্ক না পরেই কেনাবেচা করছেন। এমন প্রবণতা অলিগলির দোকানে বেশি। তবে ব্যতিক্রমও দেখা গেছে কিছু কিছু মার্কেটে। ওই সব মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন ক্রেতারা, ব্যবসায়ী, কর্মচারীরা হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্কও পরেছেন।

এদিকে, শহরের খাবার হোটেলে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ম্যানেজার, কর্মচারী কারও মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই গ্লাভস। বিভিন্ন বাজারেও একই অবস্থা। বড় বাজার, বাজারঘাটা, কালুর দোকান, উপজেলা ও লিংকরোড বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বালাই নেই। বেশিরভাগ বাজারে এতই ভিড়, দেখে মনে হয় দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শূণ্য কোটায় চলে গেছে!

সড়কে চলাচলরত অধিকাংশ সিএনজি-টমটম চালক স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। টমটমে নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছেমতো যাত্রী। বসা হচ্ছে ঘেঁষাঘেঁষি করে। যাত্রীদের আপত্তিকেও গ্রাহ্য করছে চালকেরা। এতে বাড়ছে ঝুঁকি।

কক্সবাজার চেম্বার ও সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছেন শহরবাসী। বার বার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে নিজেদের সুরক্ষা নিজেদের হাতেই। তাই সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব মানার অনুরোধ জানান তিনি।

কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। অপ্রয়োজনীয় চলাচল, ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে। নিজেকে নিরাপদে রাখা মানে নিজে এবং প্রচুর মানুষকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা। কাজেই লকডাউন শিথিল হয়েছে বলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে এটা ভাবা উচিত নয়। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে হবে। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে সময় লাগবে না।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!