লকডাউনে অর্থকষ্ট ও হতাশা নিয়ে চিকিৎসকের আত্মহত্যা

করোনার লকডাউনে অর্থকষ্টসহ বিভিন্ন কারণে হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। প্রাত্যহিক দিনযাপনে ছিল দাম্পত্যের দ্বন্দ্বও। মধ্যরাতে ঝগড়াঝাটি করে ঘুমাবেন জানিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। সকালে ফ্যানের সাথে ঝুলছিল চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকার দন্ত চিকিৎসক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর নিথর দেহ।

বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টায় রুমে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বাংলাদেশ ডেন্টাল অ্যসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী।

পরিবার জানায়, লকডাউন সময়ে ঋণ ও অর্থকষ্টে কোনমতে চলছিল তাদের জীবনধারণ। গত ১ মাস ধরে দাম্পত্য কলহও বেড়ে যায়। তার চেম্বারটির কিছু ভাড়াও জমে গেছিল। বাড়িওয়ালারো ভাড়া বাকি পড়েছিল। এ বছরের জানুয়ারিতে ক্লিনিক নতুনভাবে সাজাতে তিনি কিছু টাকা বিনিয়োগ করেন এবং কারও কারও কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। জ্বরেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। টেস্ট না করেই করোনা চিকিৎসা নিতে থাকেন এবং সুস্থও হয়ে উঠেন। কিন্তু মানসিকভাবে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মঙ্গলবার রাতে ঝগড়া করেই ঘুমাতে যান তিনি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে খারাপ লাগছে জানিয়ে ঘুমের ওষুধ খান এবং নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পরেন। সকাল ১০টার পর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে সবাই দরজা ধাক্কা দিতে থাকেন। দরজা ভেঙ্গে দেখা গেল তার নিথর দেহ সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছে।

নিহত বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ছোট বোনের স্বামী শাওন দত্ত বলেন, ‘তিনি (বিশ্বজিৎ) বলছিলেন চেম্বারটা ছেড়ে দিতে হবে, দোকানের মালিক ছেড়ে দিতে বলেছে। উনি খুব ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। আজ সকাল ১০টার পর কল এলো ব্রেকফাস্ট করে রুমে গেছে সেখানে তিনি আত্মহত্যা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। তবে কিছুক্ষণ পর দেবে। দেহটি সৎকারে চট্টগ্রামের বলুয়ারদিঘী পাড় মহাশ্মশানে নেওয়া হবে।’

আরএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!