র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোগলটুলীর সন্ত্রাসী খোরশেদ নিহত

নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ এলাকায় খোরশেদ নামের এক পেশাদার সন্ত্রাসী র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযদ্ধে নিহত হয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৭ মিডিয়া উইং মাশকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘খোরশেদ আগ্রাবাদ এলাকায় যুবলীগ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতো।তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা থাকলেও বারবার পুলিশের হাত থেকে পালিয়েছে সে।একাধিকবার কারাগারে গেলেও জামিনে বেরিয়ে বারবার অপরাধ করেই যাচ্ছিল। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য গেলে আমাদের সাথে গুলি বিনিময় করলে খুরশেদ গুলিবিদ্ধ হয়।পরে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।’

জানা গেছে,গত ১৮ আগস্ট নগরের আগ্রাবাদের বিভিন্ন শিপিংহাউজ থেকে চাঁদা আদায়ের সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে অভিযান চালালে তিনি পুলিশের উপর উল্টো হামলা চালিয়ে পালিয়ে যান। এর আগে তিনি দুইবার পালিয়েছিলেন। নগর যুবলীগের প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় খোরশেদ ইচ্ছেমতো যা খুশি তাই করছেন—এমন অভিযোগ করেন এলাকার লোকজনেরা। তবে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করত না।

সদরঘাট থানার ওসি ফজলুর রহমান ফারুকী জানান, খোরশেদ পেশাদার সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে এলাকার লোকজনের অভিযোগ রয়েছে। খোরশেদ প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলেও এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ জুন দিবাগত রাত ১টার দিকে আরেক পেশাদার সন্ত্রাসী গোলাম সরওয়ার প্রকাশ হামকা মিলনসহ ১০-১৫ সহযোগী নিয়ে মনির হোসেন মান্নান নামে এক ব্যক্তির হাত বিচ্ছিন্ন করে কুপিয়ে হত্যা করে খোরশেদ। মান্নান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে খোরশেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মান্নানকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ক্ষত-বিক্ষত মৃতদেহটি সড়কের পাশে ফেলে দেয়।

খোরশেদকে গ্রেপ্তার করার পর তার কাছে হত্যায় ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল পাওয়া যায়। এ হত্যা মামলায় বেশ কিছুদিন কারাভোগও করেছেন খোরশেদ। এর আগেও একটি অস্ত্র মামলায় জেল খেটেছিলেন তিনি।

সদরঘাটের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী খোরশেদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা আর ওয়ারেন্ট থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নগরীর কোতোয়ালী, সদরঘাট ও ডবলমুরিং থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও মাদকসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

এলাকাবাসীর তথ্যমতে, পরোয়ানাভুক্ত খোরশেদ আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, শেখ মুজিব রোড, চৌমুহনী পাঠানটুলি রোড, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, কমার্স কলেজ রোড কাটা বটগাছ, জমির উদ্দিন লেন, মোগলটুলি বাজার, বার কোয়ার্টার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতেন তিনি।

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘খোরশেদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগের কথা আমরা জেনেছি। তবে ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।’

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!