রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চীন-মার্কিন প্রতিনিধিদল, ফিরতে এবার দুই শর্ত

কক্সবাজারের উখিয়া ও সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল। এ সময় তুমব্রু সীমান্তে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা বলেন, কেড়ে নেওয়া ভিটেমাটি ও নিরাপত্তা দিলে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাবেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের কাছে এসব দাবি জানান তারা।

কী করলে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন, লি জিমিংয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা দুটি দাবি মেনে নিলে ফিরে যাওয়ার কথা জানান। তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে চীনের রাষ্ট্রদূত ঘুমধুম সীমান্তের ট্রানজিট ঘাট ও মিয়ানমার-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত) শামসুদ্দৌজা নয়নসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত) শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘তিনদিনের সফরে কক্সবাজার এসেছেন চীনের রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট পরিদর্শন করেছেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। রোববার সকাল ১১টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছায় চীনের চীনের প্রতিনিধিদল। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবে প্রতিনিধিদলটি। সেখানেও শরণার্থী রোহিঙ্গাদের মতামত নেবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। পরিদর্শন শেষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

এর আগে রোববার সকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান আমেরিকার প্রতিনিধিদল। বিমান বন্দর থেকে প্রতিনিধিদলটি সরাসরি চলে যান কুতুপালং ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার। প্রতিনিধিরা মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করবেন। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজার আসেন আমেরিকার প্রতিনিধিদল।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছেন চীনের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছেন চীনের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা

উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল চীন। চীনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার। কিন্তু রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় সেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। সেই হামলায় প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন অভিযান শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী এ সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭ জন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!