রোহিঙ্গার এনআইডি জালিয়াতির মামলার তদন্ত করবে সিআইডি

শরণার্থী হিসেবে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরব গিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নজির আহমেদের এনআইডি জালিয়াতি মামলার তদন্তভার যাচ্ছে সিআইডিতে।

সিআইডি সদর দপ্তরের আগ্রহে নগর পুলিশের কোতোয়ালী থানার হাতে থাকা এই মামলার তদন্তভার এখন সিআইডির হাতে থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান।

এর আগে ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রমজান বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নারী। রমজান বিবি নামের ২৭ বছর বয়সী ওই রোহিঙ্গা নারী ‘লাকী’ নাম নিয়ে হাটহাজারী উপজেলার মীর্জাপুর ইউনিয়নের একটি ভুয়া ঠিকানা দিয়ে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করান। তার পাসপোর্ট আবেদনের তথ্য যাচাই করতে গিয়ে ‘লাকী’ নামের কাউকে ওই ঠিকানায় না পাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়।

নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ‘লাকী’র পরিচয়পত্রের তথ্য সেখানে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু তথ্য মিলিয়ে তারা বুঝতে পারেন, সেটি তৈরি করা হয়েছে জালিয়াতির মাধ্যমে। এরপর রমজান বিবি ওরফে ‘লাকী’ এবং তার ভাই হিসেবে পরিচয় দেওয়া আজিজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম।

রমজান বিবির দেওয়া তথ্যমতে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিদেশে রওয়ানা হওয়ার সময় নজির আহমেদকে আটক করে ঢাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরের দিন সোমবার তাকে চট্টগ্রামে এনে আদালতে তোলা হলে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছিল।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নজিরের বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে। ১৯৯০ সালে কিশোর বয়সে তিনি পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন টেকনাফের মোচনি শরণার্থী শিবিরে। তার শরণার্থী কার্ড (এমআরসি) নম্বর ৬০১১৩। ২০১০ সালে নজির রোহিঙ্গা পরিচয় গোপন করে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা হিসেবে পাসপোর্ট করেছিলেন এবং ২০১২ সালে তিনি সৌদি আরব চলে যান। সেখানে তার পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে উল্লেখ করে ২০১৫ সালে এমআরপি পাসপোর্টও সংগ্রহ করেন। নজির সৌদি আরবে বসবাসের পাশাপাশি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

নজিরের কাছ থেকে পাসপোর্ট, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের’ সদস্য কার্ড, সৌদি আরবের বসবাসের অনুমতিপত্রও জব্দ করেছে পুলিশ ।

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে নজির জানান, ২০১২ সালে তিনি প্রথম সৌদি আরবে যান। সেখানে বছরখানেক অবস্থান করে বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে ফিরে তিনি মাদকের মামলায় কারাগারেও ছিলেন। ছাড়া পেয়ে গত বছর আবার সৌদিআরব চলে যান এবং এ বছরের জুন মাসে আবার দেশে আসেন।

বিভিন্ন সময়ে তিনি কক্সবাজার সদর থানা, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, দাউদকান্দি ও ফেনী সদর থানা পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ফেনীতে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মাদকের পাশাপাশি বিদেশি নাগরিক আইনে মামলাও হয়েছিল ২০১৭ সালে। নজির চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার একটি মাদক মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি বলেও জানা যায়।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!