রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট, কক্সবাজারের তিন কাউন্সিলর আটক

পরিচয় গোপন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ভোটার করার ঘটনায় কক্সবাজার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বহুল বিতর্কিত কাউন্সিলর মিজানুর রহমানসহ সাবেক ২ কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ কায়সার নোবেল ও রফিকুল ইসলাম।

রোববার সকালে (২৮ মার্চ) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন।

দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীন বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনৈকতার আশ্রয় নিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মিজানুর রহমান এবং সাবেক কাউন্সলির জাবেদ কায়সার নোবেল ও রফিকুল ইসলাম রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও পাসপোর্ট করে দেওয়ার অভিযোগ পায় দুদক। এর প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় (মামলা নং- ১০/২০২১) এবং অভিযান চালিয়ে শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করে দুদক দল। পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদেরকে থানায় সোপর্দ করা হবে।

শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট পেয়ে আসছিলেন। ২০১৯ সালে এক সঙ্গে এ ধরনের অনেক ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর সবগুলো কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে।

ইসির তদন্তের পাশাপাশি চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের তিনটি পাসপোর্ট কার্যালয়সহ বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করা প্রায় দেড়শ পাসপোর্ট আবেদনপত্রের নথি সংগ্রহ করে দুদকও নামে তার তদন্তে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার পেছনে দুই নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সাতজনের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেন দুদক কর্মকর্তারা।

দুদক থেকে অভিযান চালানোর পর ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস কোতোয়ালি থানায় এবং ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বাদী হয়ে জেলার সদর থানায় ভোটার তালিকায় ৬০০ রোহিঙ্গাদের নাম উঠানোর অভিযোগে মামলা করেন।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে দুদকের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে বলা হয়, এটা আইওয়াশ ও দায়িত্ব এড়ানোর কৌশলমাত্র মর্মে প্রতীয়মান হয়। নির্বাচন কমিশনের অসৎ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অসৎ সহযোগিতা ব্যতীত ভোটার তালিকায় নাম উঠানো কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া সম্ভব নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ও এনআইডি দেওয়ার পেছনে কাজ করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ওই চক্রে সরকারি কর্চারীদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত আছেন। তাদের শনাক্ত করতে কাজ করছে দুদক।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!