রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টায় সেনাবাহিনী

রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টায় সেনাবাহিনী 1টেকনাফ প্রতিনিধি : মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণে সবধরনের প্রস্তুতি শেষে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে তারা কাজ শুরু করেন। এর আগে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এসে চলমান প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক ধারণা নেন। ওইদিন কোথায় কী করতে হবে তা নির্ধারণ করে তারা ফিরে যান।

নিজ দেশে বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার উখিয়ায় যে দুই হাজার একর জমি নির্ধারণ করে দিয়েছে সেখানে ১৪ হাজার শেড তৈরি করবে সেনাবাহিনী। এসব শেডের প্রতিটিতে ছয়জন করে ৮৪ হাজার পরিবারকে বসবাসের সুযোগ করে দেয়া হবে। শেড নির্মাণের পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী। জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় কর এটি করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার সকালে ৩৬ বীর, ২৪ বেঙ্গল ও ৬৩ বেঙ্গল নামে তিনটি টিম রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী ও থাইংখালী আসেন। এসময় ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মো. রাশেদ আকতার এসপি ঢাকাটাইমসকে বলেন, পূর্ব সিদ্ধান্ত মতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা এসে সেনা সদস্যরা প্রথমে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে কাজ শুরু করেন। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন ও বিচ্ছিন্ন ত্রাণ বিতরণ এবং রাস্তায় রোহিঙ্গাদের অহেতুক জটলা সরিয়ে দিয়ে সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করা হয়েছে।

সেনা কর্মকর্তা বলেন, এরপর কন্ট্রোল রুমে জমা হওয়া দ্রুত পচনযোগ্য খাবারগুলো আলাদা করে বিতরণ করা হবে। বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে এসব ত্রাণ দেয়া হবে। এরপর বায়োমেট্রিকের সুবিধা ম্যাসেজটা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছি। যাতে কচ্ছপ গতি থেকে চলমান এ নিবন্ধন প্রক্রিয়াটা খরগোশ গতিতে আসে।

রাশেদ আকতার বলেন, কাজের সুবিধার্থে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের পরিত্যক্ত একটি কক্ষকে কোম্পানির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শনিবার প্রথম দিন হিসেবে শুধু শৃঙ্খলা আনতে কাজ করছি। তাই শেড নির্মাণে হাত দেয়া যাবে না। রবিবার থেকে একটি টিম শেড নির্মাণের কাজ শুরু করবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর আশ্রয়ের আশায় বাংলাদেশে ঢুকেছে রোহিঙ্গারা। মানবিকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক সহায়তা দিতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

ডিসি বলেন, এ পর্যন্ত ১২৯ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী জেলা প্রশাসকের ত্রাণভাণ্ডারে জমা পড়েছে। প্রতিদিনই এভাবে আসছে ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের পাঠানো ত্রাণ।

এদিকে জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, উখিয়ার ৭১ কিলোমিটারজুড়ে বসানো হয়েছে ১১টি চেকপোস্ট। ২২টি মোবাইল টিম কাজ করছে। এসব টিমের হাতে আটক রোহিঙ্গা নিয়ে বাণিজ্য করা ২১২ দালালকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তারা সাজা দিয়েছে। পাশাপাশি আগত রোহিঙ্গারা যাতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে এসব চেকপোস্ট ও টিম। ইতিমধ্যে চেকপোস্টগুলোতে পাঁচ হাজার ১১৯ রোহিঙ্গাকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!