রোহিঙ্গাদের এনআইডি দিয়ে ইসির ৮ কর্মী কামিয়েছেন ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকা

দুদকের মামলা

পরস্পর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক দালাল সহ নিবার্চন কমিশনে কর্মরত ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন- চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ জলদি আসকারিয়া পাড়ার মো. আবদুল মোনাফের পুত্র ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন (৩৪), একই অফিসে কর্মরত জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী অফিস সহায়ক আনিছুন নাহার (২৯), বাকলিয়া থানার চকবাজার এলাকার সৈয়দ শাহ রোডের নাজির শাহ কলোনির আজিম উদ্দিনের পুত্র মো. জাফর (৩৩), আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া গ্রামের সুধা রঞ্জন দে’র পুত্র সত্য সুন্দর দে (৪১), পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন লালু সওদাগরের বাড়ির মো. রুবেলের স্ত্রী সীমা দাশ প্রকাশ সুমাইয়া জাহান (৩২), কোতোয়ালী থানার ৩৩ নম্বর মাছুয়া ঝর্ণা লেইনের হারাধন দাশের পুত্র বিজয় দাশ (২৮), অস্থায়ী অফিস সহকারী ঋষিকেশ দাশ (৪১), বান্দরবান জেলার বান্দরবান বাজার এলাকার জগমোহন কান্তি নাথের পুত্র বান্দরবান সদর উপজেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরুপম কান্তি নাথ (২৯)।

এদিকে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের স্থায়ী অফিস সহকারী ঋষিকেশ দাশ ও বান্দরবান সদর উপজেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরুপম কান্তি নাথকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে চট্টগ্রাম আদালতে প্রেরণ করা হয়। এদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন, মো. জাফর, সত্য সুন্দর দে ও সীমা দাশ প্রকাশ সুমাইয়া জাহান কারাগারে রয়েছে। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, আসামিরা অবৈধভাবে অর্থগ্রহণের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বানিয়ে দেয়। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চকবাজার শাখায় ৩৫ লাখ ৩ হাজার ১৫২ টাকা, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক আনোয়ারা শাখায় ২৮ লাখ ২০ হাজার ১৪৪ টাকা, প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী শাখায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা সহ মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা লেনদেন করা হয়। আসামিরা একে অপরের মাধ্যমে এই অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও বাড়ি নির্মাণ ব্যয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারা এবং দন্ডবিধি ১০৯ ধারাসহ ১৯৭৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, আসামিরা একে অপরে যোগসাজশে অবৈধভাবে অর্থগ্রহণের মাধমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়ে ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা আর্থিক লেনদেন করেন। এদের মধ্যে দুই আসামি ছাড়া বাকিরা কারাগারে। পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তকালে অন্য কারও সম্পৃক্ত পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

মুআ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!