রোববারের পরিবহন ধর্মঘট প্রতিহত করার ঘোষণা অপরপক্ষের

চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে রোববারে (৮ সেপ্টেম্বর) ডাকা ধর্মঘটের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

এতে রোববারের পরিবহন ধর্মঘট প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে তারা।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এফ রহমান হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল।

লিখিত বক্তব্যে বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদ নামে নাম সর্বস্ব সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন সেক্টরে বিশৃংখলা সৃষ্টি ও চাঁদাবাজিসহ গাড়ির পারমিট প্রদানের নামে মালিকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা আবার গাড়ির মালিকদের জন্য মায়াকান্না করছে। কথিত এ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। একইসাথে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। যা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা হয়ে পড়বে। পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি, চাঁদাবাজি, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধাচারণ ও সরকারের উন্নয়ন বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে পরবিহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়ে রাস্তায় নামলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধর্মঘটের হুমকি দাতাদেরকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেবে।’

বেলায়েত হোসেন বেলাল আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় থেকে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা দুর করে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করতে কতিপয় নাম সর্বস্ব পরিবহন সংগঠন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সর্বত্র গুজব ছড়াচ্ছে এবং কোন কারণ ছাড়াই ধর্মঘটের হুমকি দিচ্ছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর তথাকথিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ৭২ ঘণ্টার সময় নির্ধারণ করে যে ৯টি দাবি দেয়া হয়েছে; সেগুলো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বে-আইনি। এসব দাবির বিষয়ে কোন ধরনের আলোচনায় না বসতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের মেট্টোপলিটন এলাকাসহ সকল জেলা-উপজেলায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। সকল মালিক-শ্রমিক স্ব-স্ব গাড়ি নিজেরাই রাস্তায় বের করবে। অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের নামে যদি কেউ রাস্তায় বিশৃংখলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় তাহলে চট্টগ্রাম বিভাগের গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণ তা শক্তহাতে প্রতিরোধ করবে এবং তাদেরকে ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করবে।’

চট্টগ্রাম বিআরটিএতে কমপক্ষে ৪-৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান নেতৃবৃন্দরা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল নবী লেদু, বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ফ্ল্যাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাশেম।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ধুম-শুভপুর হিউম্যান হলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আবছার, আন্তঃ জেলা ট্রাক-কভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি মনির আহমদ, আন্তঃজেলা ট্রাক-কভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দ্বীন মোহাম্মদ, বন্দর ট্রাক মালিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সোহেল, রাঙ্গামাটি জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর হোসেন, চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা ট্রাক-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইলিয়াছ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!