রোজায় ফুটপাত ও সড়ক দখল নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কঠোর স্বর

রমজান আসলে বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় যানজট, ছিনতাই-চাঁদাবাজি। ঢাকার মত এতো বড় শহরে যদি হকারদের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, চট্টগ্রামে কেন পারব না?

আসন্ন রমজানে নগরীর ফুটপাত দখল করে ইফতারির বাজার বসানো ও সড়ক দখল করে অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহবুবর রহমান। একই সঙ্গে রমজানকে ঘিরে মার্কেটকেন্দ্রিক ছিনতাই চাঁদাবাজি হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে (৩০ এপ্রিল) দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সিএমপি কমিশনার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ী, পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পুলিশ কমিশনার এসব কথা বলেন।

সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, ‘রমজান আসলে বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় যানজট, ছিনতাই-চাঁদাবাজি। ঢাকার মত এতো বড় শহরে যদি হকারদের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, চট্টগ্রামে কেন পারব না? কিন্তু আমরা কঠোর হতে চাই না। রাস্তা দোকান করার জায়গা না। এটা পরিবহনের জায়গা। ফুটপাতও হকারদের জায়গা না। এখানে পথচারীদের হাঁটার জায়গা। আশাকরি হকার ও দোকান মালিকরা বিষয়টির দিকে সর্তক দৃষ্টি রাখবেন। মূল কথা রমজানে নগরীর যানজট নিরসনে সড়ক ও ফুটপাতে কোনো ধরনের দোকান ভ্যান গাড়ি বসতে পারবে না। সড়ক আর ফুটপাত একেবারে ক্লিন থাকবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকল পুলিশ অফিসারদের আমি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিচ্ছি।’

ছিনতাই চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ী ভাইদের বলবো আপানারা নিজস্ব সিকিউিরিটির ব্যবস্থা করেন। মার্কেটে দোকানে সিসিটিভির ব্যবস্থা করেন। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করেন। এরপরও মার্কেটকেন্দ্রিক যদি কোন ধরনের চাঁদাবাজি ছিনতাই হয় নিকটস্থ থানার ওসিদের জানাবেন। সেটি মোবাইলে বা মৌখিকভাবে জানালেও হবে। যদি কোনো ওসি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তার দায় দায়িত্ব ওসিদের নিতে হবে। রমজানে ছিনতাই চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।’

এ সময় কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জোনের কর্মকর্তাদের নিউমার্কেটকেন্দ্রিক কোনো হকার যাতে রাস্তায় না বসে সেদিকে লক্ষ্য রাখার কড়া নির্দেশ দেন সিএমপি কমিশনার।

মার্কেট সমিতির উদ্দেশ্যে পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, ‘মার্কেটকেন্দ্রিক যানজট নিরসনের জন্য এক ঘণ্টার পর প্রত্যেক গাড়ির জন্য পার্কিং ফির ব্যবস্থা চালু করেন। গাড়ি পার্কিং করা মাত্রই স্টিকার লাগিয়ে দেবেন, তারপর বের হওয়ার সময় যাতে প্রতি ঘণ্টার জন্য পার্কিং ফি দিতে হয়। এ ব্যবস্থা চালু করলে গাড়ির যানজট নিরসন অনেকটা কমবে। এছাড়া তামাকুমন্ডি লেইন, রিয়াজউদ্দিন বাজার ও হকার্স মার্কেটকেন্দ্রিক যানজট নিরসনে সেখানে আসা ক্রেতাদের জন্য অস্থায়ী কোনো মাঠে ফি দিয়ে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

এ সময় ঈদের আগে যথাসময়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান সিএমপি কমিশনার। ইফতার তারাবি ও সেহেরির সময় গানবাজনা ও মাইক বাজানো বন্ধ রাখা। গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে সকলকে সর্তক থাকাসহ অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি ও টিকিট কালোবাজারিদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন সিএমপি কমিশনার।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম, উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হারুনুর রশিদ হাযারী, সিমএমপির উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক সভায় বক্তব্য দেন।

এডি/ সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!