রোগীর মৃত্যু, করোনা সন্দেহে চট্টগ্রামের হাসপাতালে এইচডিইউ ইউনিট বন্ধ

চিকিৎসক গেলেন কোয়ারেন্টাইনে

চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল রয়েল হাসপাতালের ‘এইচডিইউতে (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগী মারা যাওয়ার পর করোনা সন্দেহে হাসপাতালটির আইসিইউ-এইচডিইউ ইউনিট বন্ধ করে রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে যে চিকিৎসক ওই রোগীর সেবা দিয়েছেন তিনিও নিজে থেকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই রোগী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭ টায় বিবি মরিয়ম (৩৬) নামের সেই রোগী কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিন দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগী মারা গেছে। তবে শুক্রবার রাত থেকে হাসপাতালের ইউনিট দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এর কিছুই কেউ টের পায়নি। সোমবার (২৩ মার্চ) থেকে তা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।

এ প্রসঙ্গে রয়েল হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক নুরুল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঠিক বন্ধ না। আমাদের এখানে একজন রোগী নিউমোনিয়ায় মারা যায়। তবে নিজেদের বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আমাদের আইসিইউ (ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) ও এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে) ইউনিট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। আপাতত বন্ধ আছে। রোগী এলেই চিকিৎসা দেওয়া হবে। এমনিতেই করোনা আতঙ্কে এখন রোগী কম আসছেন। তাছাড়া যে চিকিৎসক ওই রোগীকে সেবা দিয়েছেন তিনি নিজে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্ব নিয়েই লিখিতভাবে সিভিল সার্জন মহোদয়কে জানিয়েছি। তাছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখার একটি টিম রোববার হাসপাতালে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছেন। সবকিছু বিবেচনা করেই তারা বলছেন রোগীর নিউমোনিয়া হয়েছে।’

বিবি মরিয়মের স্বামী আনসার আলী বলেন, ‘আমার স্ত্রী শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ডাক্তার তার মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া বলে জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ওই রোগীর মৃত্যুর ব্যাপারে জানিয়েছে। আমরা রোগীর সমস্ত হিস্ট্রি জেনেছি। রোগী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। তার কাশি এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। তবে ওই রোগী নিজে এবং তার কোনো আত্মীয়-স্বজন বিদেশফেরত ছিলেন না। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হয়তো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্যান্য রোগী এবং নিজেদের সতর্কতা হিসেবে আইসিইউ-এইচডিইউ সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।’

প্রসঙ্গত, সরকারি হিসেবে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৯৭৩ জন প্রবাসী।

এসআর/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!