রেল কাউন্টারে টিকেট নেই বললেই ব্যবস্থা

টিকেট বিক্রিতে অনিয়ম ও অসৌজন্যমূলক আচরণ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে ইতিমধ্যে।

পরিপত্রের আদেশে টিকেট থাকার পরও কোনও অজুহাতে বুকিং কাউন্টারে টিকেট নেই— বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হলে কিংবা অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেলওয়ের বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শওকত জামিল মোহসী স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্রে প্রধান বুকিং সহকারী, স্টেশন মাস্টার, স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট, টিআই, এসএমআর, এওসিকে যে কোনও ধরনের টিকেট বিক্রিতে অনিয়ম ও অসদাচারণে নিবিড় মনিটরিং করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিককালে গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিভিন্ন স্টেশনে টিকেট বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিত্যনতুন অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছে— যা বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ওয়েবসাইট, পত্রপত্রিকা এবং সম্মানিত যাত্রীগণের নিকট হতে প্রতিনিয়ত অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে । বিভিন্ন অজুহাতে কাউন্টার থেকে সম্মানিত যাত্রীদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হলেও ট্রেন ভ্রমণকালে ট্রেনের আসন খালি পরিলক্ষিত হচ্ছে অথচ বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম চালু আছে যা টিকেট বিক্রয়ের ১ম দিন সরাসরি কাউন্টারে উম্মুক্ত হয় ৫০% টিকেট (অটো কোটা ব্যতিত) এবং অবশিষ্ট ৫০% টিকেট রেল সেবা অ্যাপে উন্মুক্ত হয়।

৫ দিন অতিবাহিত হবার পর সবগুলো টিকেট কমন পদ্ধতিতে কাটা যায় অর্থাৎ কাউন্টার থেকেও কাটা যায়, অ্যাপস থেকেও কাটা যায়। বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমানে পশ্চিম অঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলসহ মোট ৭৮টি কম্পিউটারাইজড স্টেশন রয়েছে। এ ৭৮টি স্টেশন থেকে যে কোন ট্রেনের যে কোন শ্রেণির এবং যে কোন স্টেশন পর্যন্ত টিকেট কাটার সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে।

এমতাবস্থায়, কোন কম্পিউটারাইজড স্টেশনে টিকেট নাই কথাটি সহজে বলার কোন অবকাশ নাই। তাই সংশ্লিষ্ট প্রধান বুকিং সহকারী, স্টেশন মাস্টার, স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট, টিআই(সি), এসএমআর, এসিওকে নিবিড় মনিটরিং এর মাধ্যমে কাউন্টারে টিকেট বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে কোন রূপ অনিয়ম, যাত্রীদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ এবং বিভিন্ন অজুহাতে কাউন্টার হতে টিকেট নাই বলে সম্মানিত যাত্রীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে কিনা তা নিশ্চিতকল্পে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।

অতএব, বিভিন্ন অজুহাতে কাউন্টার থেকে টিকেট থাকা সত্ত্বেও টিকেট নাই মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেলে এবং বুকিং কাউন্টারে টিকেট নাই মর্মে বিজ্ঞপ্তি টানানো হলে এমনকি টিকেট বিক্রয়ে বিন্দুমাত্র অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট বুকিং সহকারী, প্রধান বুকিং সহকারী, স্টেশন মাস্টার, স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট, টিআই সি) এবং সংশিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে রেলওয়ের বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে ২২ ডিসেম্বর টিকেট কালোবাজারি ও সব ধরণের অনিয়ম রোধে টিকেটে কোটা পদ্ধতি রোধ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে আটো কোটা ছাড়া যে কোনও ধরনের টিকেট ব্লক করে রাখা বন্ধ হয়ে যায়।

অভিযোগ রয়েছে, যাত্রীরা টিকেটের জন্য স্টেশনে গেলে বলা হয় টিকেট নেই। নানা অজুহাতে যাত্রীদের টিকেট দেওয়া হয় না। অথচ ট্রেন ছাড়ার পর দেখা যায়, বগির অধিকাংশ আসনই খালি। কিন্তু স্টেশনের বিভিন্ন স্থানে কালোবাজারিদের কাছে বেশি টাকায় টিকেট কিনতে পাওয়া যায়। তাছাড়া অনেক টিকেট কাউন্টারে কর্মকর্তারা যাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ফলে দিন দিন রেলভ্রমণের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন লোকজন।

জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে মোট ৭৮টি কম্পিউটারাজইড স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনে যে কোনও ধরনের ট্রেনের টিকেট কাটার সুযোগ রয়েছে। ফলে কোনও কম্পিউটারাইজড স্টেশনে টিকেট নেই— এ কথা বলার অবকাশ নেই।

সিএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!