‘রেকি’ করে লুটের ছক কষে ডাকাতরা

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে আটক হলো আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্য। যারা ৩০ আগস্ট চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় সংগঠিত ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত এবং এর আগে ডাকাতির ঘটনায় একাধিকবার কারাভোগও করেছেন। তাদেরকে আটকের ক্ষেত্রে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিটের সমৃদ্ধ ডাটাবেইজ সহায়তা করেছে বলে জানান পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।

আটককৃত চার ডাকাত হলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে নুরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ভুজপুর উপজেলার বাগান বাজার এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম, নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ মোশারফ এবং একই এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম খলিল।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসপির নাজমুল হাসান বলেন, ৩০ আগস্ট ১৫ থেকে ২০ জনের মুখোশধারী একদল ডাকাত ফটিকছড়ির দৌলতপুর গ্রামের মোহাম্মদ মহসিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ডাকাতি করে। ডাকাতদল নগদ ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা, সাড়ে ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং ৮টি মোবাইল লুট করে। এই ঘটনার পর থানায় মামলা দায়ের হলে পিবিআই প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার স্যারের নির্দেশে আমরা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করি।

তিনি আরো জানান, মামলার তদন্তভার গ্রহণ করার পর আমরা আমাদের ডাটাবেজ অনুযায়ী খুব দ্রুত ডাকাত দলকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। তাদেরকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ফেনী, নোয়াখালী এবং খাগড়াছড়িতে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু তারা পেশাদার ডাকাত হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপন করেছিল অন্যত্র। অবশেষে ২৭ নভেম্বর ৪ জনকে আমরা গ্রেপ্তারে সক্ষম হই।

এসপি নাজমুল আরো জানান, আটককৃত নুরুল ইসলামের প্রধান দায়িত্ব থাকে যে বাড়ি ডাকাতি করা হবে সেই বাড়ির সম্পদ-সামর্থ্য পরিমাপ করা এবং সমস্যা-সম্ভাবনা জরিপ করা। জরিপ শেষে পলাতক আরেক দুর্ধর্ষ ডাকাতের সহযোগিতায় পরিকল্পনা করত তারা। পলাতকদের একজনের দায়িত্ব ছিল ডাকাতির জনবল সংগ্রহ করা।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাতির ঘটনায় লুটকৃত মালামাল নিজেদের মধ্যে তারা নিলামের তুলত। নিলামে যার দাম সর্বোচ্চ থাকতো তাকে সব মালামাল দেওয়া হতো। ডাকাত দলের সেই সদস্য মালামাল বাজারে বিক্রি করে ওই নিলামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য নিজে ভোগ করতো এবং বিক্রয় লব্দ অর্থ সবার মাঝে বন্টন করতো।

ফটিকছড়ির ডাকাতির ঘটনায় লুটকৃত মালামাল তারা কর্নেল হাট এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রানা কান্তি দের দোকানে বিক্রি করেছিল। ওই দোকান থেকে স্বর্ণের একটি চেইন ও কানের দুল উদ্ধার করে পিবিআই।

আসামিদের আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।

এফএম/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!