রিং রোড ধসে পড়ায় সিডিএর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি

২৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পতেঙ্গায় শহর রক্ষা বাঁধ কাম আউটার রিং রোডের ওয়াকওয়ে ধসে পড়ার ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ ঘটনায় বহুল আলোচিত এ প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে পুরো চট্টগ্রামজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়ন সংস্থা সিডিএ ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়ে তিন সদস্যের এ কমিটি গঠন করলো।

সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘রিং রোডের ওয়াকওয়ে ধসে পড়ার ঘটনা যেহেতু ঘটেছে তাই এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। ঘটনার সঠিক কারণ জানতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) মাহমুদ হোসাইন খানকে প্রধান করে সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাবিবকে সদস্য সচিব ও নির্বাহী প্রকৌশলী, অথোরাইজড অফিসার মনজুর হাসানকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে জোয়ারের পানির তোড়ে পতেঙ্গায় আউটার রিং রোডের ওয়াকওয়ের কয়েকটি অংশ ধসে পড়ে। এ নিয়ে চট্টগ্রামজুড়ে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামকে দায়ী করে নানা সমালোচনা উঠে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তদন্তের দাবিও উঠে। এমনকি নাগরিক উদ্যোগ নামে একটি সংগঠন রিং রোডের অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে।

অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালক সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্ বলছেন, ‘গাইডওয়াল থাকার পরও সামান্য একটা ফুটো থাকায় সেটা দিয়ে বালি জোয়ারের পানিতে বালি চলে যাওয়ায় সামান্য ওয়াকওয়ে ধসে গেছে। তবে সেটি নির্মাণাধীন যে দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ বাকি, তার মধ্যে পড়ায় তা দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংস্কার করা সম্ভব।’

প্রসঙ্গত, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ২০০৫ সাল থেকে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণের জন্য ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে জাইকা। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে চার লেনের এ সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আড়াই হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। উপকূলীয় বাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণ নামে এ প্রকল্পের আওতায় ১৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হবে। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার মূল ও ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে।

শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮৬৫ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দুই বার সংশোধনের পর বর্তমানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৭২০ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ও জাইকার সহায়তা ৭০৬ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!