রাসেলের তাণ্ডবের কাছে চট্টগ্রামের স্বপ্নভঙ্গ, ফাইনালে রাজশাহী

বিবিপিএল ফাইনাল শুক্রবার

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে চট্টগ্রামের ফাইনালের যাওয়ার স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছেন রাজশাহী রয়্যালসের অধিনায়ক ক্যারিবিয় ‘দানব’ আন্দ্রে রাসেল। স্বদেশী ‘ইউনিভার্সেল বস’ ক্রিস গেইল চট্টগ্রামের ইনিংসের শুরুতে ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু সেই ঝড় শেষ দশ ওভারে ধারাবাহিক রাখতে না পারায় হৃষ্টপুষ্ট হয়নি তাদের ইনিংস। অন্যদিকে রাজশাহী তাদের ইনিংসের প্রায় ১৫ ওভার ছিল ম্রিয়মান। কিন্তু শেষ দিকে রাসেল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যে তাণ্ডব চালান তাতে করে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চট্টগ্রামের শেষ কয়েক ওভারের বোলিং।

ম্যাচ জিততে শেষ ৪২ বলে রাজশাহী রয়্যালসের প্রয়োজন দাড়ায় ৮৭ রান। রান ও বলের সাথে বিশাল ব্যবধান। এই অবস্থায় বিগ হিটার খ্যাত আন্দ্রে রাসেল নামলেন। এবং ব্যাট হাতে যা করলেন তাকে বলে ঝড়, ছক্কা-চারের ঝড়। সেই ঝড়েই উড়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন। ২ উইকেটে ম্যাচ জিতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে উঠে এলো রাজশাহী রয়্যালস। ১৭ জানুয়ারির বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সেই ফাইনালে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে খুলনা টাইগার্স।

সত্যিকার অর্থেই রয়্যালসরা রাজকীয় কায়দায় এই ম্যাচ জিতে ফাইনালে খেলছে। ২২ বলে হার না মানা ৫৪ রান করে আন্দ্রে রাসেল অবিস্মরনীয় কায়দায় প্রায় একা হাতে দলকে ফাইনালে তুলে আনলেন। ৭ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারিতে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে আন্দ্রে রাসেল জানিয়ে দিলেন- টার্গেট যতই অসম্ভব হোক না কেন, ব্যাট হাতে তিনি দুর্বার!

চট্টগ্রামের ইনিংসে ২৪ বলে ৬০ রান করে ক্রিস গেইল ধামাকা তুলেছিলেন। রাজশাহীর ইনিংসে তার স্বদেশি আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটিং সেই হিসেবও চুকিয়ে দিল।

অথচ ব্যাটিংয়ের শুরুটা এই ম্যাচে রাজশাহী রয়্যালসকে প্রায় ডুবিয়ে দিয়েছিল। প্রচুর ডটবল এবং ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ম্যাচের কোন সময় রাজশাহী জয়ী অবস্থানে ছিল না। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চট্টগ্রামের উঠতি তারকা ইরফান শুক্কুর ও শোয়েব মালিক চতুর্থ উইকেট জুটিতে যে গতিতে ব্যাট করেন সেটা রাজশাহীর সমস্যা আরো বাড়িয়ে দেয়। এই জুটিতে রাজশাহী পায় ৪৬ বলে ৪৬ রান। ততক্ষনে প্রয়োজনীয় রানরেট অনেক বেড়ে গেছে।

শেষ ৩৬ বলে চাই ৮৩ রান। অতো বিপুল রানের চাহিদা মেটাতে রাজশাহী রয়্যালসের প্রয়োজন ছিল শেষের এক ঝড়ের। রুবেল হোসেনের তৃতীয় এবং ইনিংসের ১৬ নম্বর ওভারে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজ মেরেকেটে ১৯ রান আদায় করেন। দুই ছক্কা, ১ বাউন্ডারি ও তিন সিঙ্গেলসে রুবেল হোসেনের খরুচে সেই ওভারে ম্যাচে ফিরে আসার শক্তি পায় রাজশাহী রয়্যালস। রায়াদ এমরিত তার শেষ ওভারে দুই উইকেট পেলেও খরচা করেন ২০ রান। আর ম্যাচ জয়ের আসল কাজটা করলেন আন্দ্রে রাসেল মেহেদি হাসান রানার শেষ ওভারে। ইনিংসের ১৯ নম্বর সেই ওভার থেকে রাজশাহী তুলে নিল ২৩ রান।

শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে চাই ৮ রানের। অ্যাসেলা গুনেরত্নের তৃতীয় বলে ম্যাচের নিজের সাত নম্বর ছক্কা হাঁকিয়ে আন্দ্রে রাসেল রাজশাহীকে তুলে দিলেন বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে।

আরেকবার প্রমানিত হলে-ক্রিকেটে আসলে শুরুটা নয়, শেষটাই আসল!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৬৪/৯ (২০ ওভারে, গেইল ৬০, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, গুনেরত্নে ৩১, নওয়াজ ২/১৩, আফিফ ১/২০, কাপালি ১/১৯)। রাজশাহী রয়্যালস: ১৬৫/৮ (১৯.২ ওভারে, ইরফান সুকুর ৪৫, শোয়েব মালিক ১৪, রাসেল ৫৪, রুবেল ২/৩২, এমরিট ২/৪১)।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: আন্দ্রে রাসেল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!