রানের ভেন্যু এজবাস্টনে লড়বে বাংলাদেশ-ভারত

ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম পুরাতন ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোর অন্যতম বার্মিংহামের এজবাস্টন। ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব ওয়ারউইকশায়ারের হোম ভেন্যু, এজবাস্টন নামেই ক্রিকেটে বিখ্যাত। শুধু কাউন্টি ক্রিকেটের জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির জন্যও ব্যবহৃত হয় এই স্টেডিয়াম।

ক্রিকেটের অনেক ঐতিহাসিক কীর্তির স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে এই স্টেডিয়াম। ১৯৯৪ সালে ডারহামের বিপক্ষে ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে ব্রায়ান লারা অপরাজিত ৫০১ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন এই মাঠেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ইতিহাসে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি।

এর আগে চারটি বিশ্বকাপের ভেন্যু হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিল এজবাস্টন। এর মধ্যে ১৯৭৯, ১৯৮৩ এবং ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ম্যাচও আয়োজন করেছিল এই স্টেডিয়ামটি।

তবে ক্রিকেট সমর্থকরা এজবাস্টনকে মনে রেখেছে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সেমিফাইনালের কারণে। যে ম্যাচকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ বলে মনে করা হয়। যে ম্যাচের একেবারে শেষ বলে এসে ল্যান্স ক্লুজনার আর অ্যালান ডোনাল্ড ভুল করে রানআউট হয়ে গিয়েছিলেন।

ওই সময় অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে রান সমান হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ডোনাল্ড আর ক্লুজনারের ভুলে রানআউটের কারণে নিয়ম অনুসারে অস্ট্রেলিয়াই উঠে গেলো ফাইনালে। ইংল্যান্ড নিজেদের দেশে লর্ডসের বাইরে কোনো আইসিসি ইভেন্টের ফাইনাল আয়োজন করেন ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। লর্ডস, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড এবং দ্য ওভালের পর এজবাস্টনই হচ্ছে ইংল্যান্ডের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রিকেট ভেন্যু।

১৯৯৭ সালে ওয়ারউইকশায়ার আর সমারসেটের মাঝে ম্যাচের মধ্য দিয়ে প্রথম দিবা-রাত্রির ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে এজবাস্টনের। এছাড়া ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচের আয়োজন করে এই স্টেডিয়াম।

এবারের বিশ্বকাপে একটি সেমিফাইনালসহ বেশ কয়েকটি ম্যাচের আয়োজক এজবাস্টন। এর মধ্যে রয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ-ভারত, নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ আয়োজন করবে এজবাস্টন।

ব্যাটিং পারফরম্যান্স:-
দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর: ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৯ উইকেট হারিয়ে ৪০৮ রান করেছিল।
সর্বনিম্ন স্কোর: ১৯৭৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৭০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান: ইংল্যান্ডের সাবেক ওপেনার অ্যান্ড্রু স্ট্রস এই মাঠে ৩৪৩ রান করে সবার ওপরে রয়েছে।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ: ১৯৭৫ সালে পূর্ব আফ্রিকার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের গ্লেন টার্নার ১৭১ রানে অপরাজিত ছিল।
সেঞ্চুরি: ১৯টি। ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচ এই মাঠে সর্বোচ্চ দুটি সেঞ্চুরি করেছেন।

বোলিং পারফরম্যান্স:-
সর্বোচ্চ উইকেট: ইংল্যান্ডের ড্যারেন গফ এই ভেন্যুতে সর্বোচ্চ ২১টি উইকেট পেয়েছেন।
এক ম্যাচে সেরা বোলিং: ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জস হ্যাজেলউড ৫২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন।
৫ উইকেট: মোট ৮বার এই মাঠে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন বোলাররা।

উইকেটকিপিং পারফরম্যান্স:-
সর্বোচ্চ ডিসমিসাল: অস্ট্রেলিয়ার রড মার্শ সর্বোচ্চ ১১টি ডিসমিসাল করেছেন।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ: ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের গ্রাইন্ট জোন্স ৫টি ডিসমিসাল করেছেন।

ফিল্ডিং পারফরম্যান্স:-
সর্বোচ্চ ক্যাচ: ইংল্যান্ডের মার্কাস ট্রেসকথিক সর্বোচ্চ ৬টি ক্যাচ নিয়েছেন।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ: ১৯৯১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিচি রিচার্ডসন, ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪টি করে ক্যাচ নিয়েছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!