রাতে রক্তে ভিজলো নালাপাড়া, ইসলামিয়া কলেজে ছাত্রলীগের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের

বিকেলে হামলা সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার ঘরে

রাতে রক্তে ভিজলো চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর নালাপাড়া। সদরঘাটের ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে উত্তর নালাপাড়ায় কোপানো হল ছাত্রলীগেরই এক নেতাকে।

২৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টায় নগরীর উত্তর নালাপাড়ায় নির্মমভাবে কোপানো হয় ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভীকে। এ সময় তার মোটরসাইকেলটিও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা রিজভীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তির পর রাতেই রিজভীকে সাত ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে চমেক হাসপাতালের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে মাদারবাড়ি এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা নুরনবী চৌধুরীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা ঘরে ঢুকতে না পারলেও তার ছেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও ইসলামিয়া কলেজের সাবেক এজিএস আশিক-উন-নবী চৌধুরীর মোটরসাইকেলটি কুপিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে। এলাকার চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে ওই পরিবার অভিযোগ করেছে।

জানা গেছে, নগরীর ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফরম পূরণ ছাড়াও কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত সোমবার (২৩ আগস্ট) থেকে ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরেও নগরীর সদরঘাট এলাকার কলেজটিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোঁড়ার শব্দ শোনা গেছে। এর আগে বুধবার (২৫ আগস্ট) নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, একদিকে যেমন এই দ্বন্দ্ব ওই কলেজের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের চার উপগ্রুপের নিজেদের মধ্যে। আবার এর বাইরে আওয়ামী লীগ নেতা আবু কায়সারের নেতৃত্বাধীন অপর একটি গ্রুপও সক্রিয় এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে।

খলিলুর রহমান নাহিদের সমর্থক গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক রনি, ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম পারেল এবং কলেজের এজিএস নোমান সাঈদ।

জানা গেছে, বুধবার (২৫ আগস্ট) ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের এজিএস নোমান সাঈদকে সদরঘাট থানার কলেজের সামনে থেকে ধাওয়া করার ঘটনায় খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপ ও আবু কায়সার গ্রুপ নিয়েছে মুখোমুখি অবস্থান। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে এই দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। ওইদিন সকাল ১১টা থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে দুজনকে ছুরিসহ আটকও করে পুলিশ। তাতে উত্তেজনা খানিকটা কমলেও খলিলুর রহমান নাহিদের সমর্থক গ্রুপগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে উত্তর নালাপাড়ায় কোপানো হল ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভীকে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!