বড় অর্জনের হাতছানি নিয়েই বৃহস্পতিবার রাজকোটে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে নামছেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা। নবম দেখায় দিল্লিতে এসেছিল প্রথম জয়। দশম দেখায় যদি দ্বিতীয়বারের মতো জয় মুঠোয় চলে আসে, তাহলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হবে বাংলাদেশের। তখন ১০ নভেম্বরের নাগপুরের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ খেলতে পারবে বেশ নির্ভার হয়ে।
দিল্লি জয়ের পর বলতে গেলে উদযাপনই করেনি বাংলাদেশ। জমিয়ে রেখেছে আজকের জয়ের জন্য। রাজকোটেও একই ফলাফল হলে সিরিজ জয়ের উদযাপনে সেটি পুষিয়ে দিতে চাইবে টিম টাইগার্স।
রোববার অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ৭ উইকেটে হারালেও সেভাবে উদযাপন করেনি টিম টাইগার্স। ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতানো মুশফিকুর রহিম ছিলেন শান্ত, স্বাভাবিক। পরে সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিত দেন, সিরিজ জিতলে দেখা যাবে ভিন্ন চিত্র।
অনেক চ্যালেঞ্জ থাকার পরও শুরুর ম্যাচেই দলীয় পারফরম্যান্সে পাওয়া জয় প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। সাকিব-তামিম ছাড়াও বোলিং ও ব্যাটিংয়ে যে ইতিবাচক মনোভাবের প্রকাশ ঘটিয়েছেন টাইগার ক্রিকেটাররা, তার বন্দনা চলছে সর্বত্র।
ভারতের সংবাদমাধ্যমে অভিজ্ঞ মুশফিক তো বটেই, তরুণ আমিনুল-আফিফ-নাঈমদের অবদান ও সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে।
টি-টোয়েন্টিতে বছরটা ভালো যাচ্ছে না ভারতের। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সবশেষ সিরিজে ড্র (১-১) করেছে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের তারা হোয়াইটওয়াশ (৩-০) করলেও ঘরের মাঠে তার আগে আগেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে (২-০)। যার প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিংয়ে। বর্তমানে ভারত বিশ্বের পাঁচ নম্বর দল।
চারধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ দশ নম্বরে থাকলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ আশা জাগানিয়া। গত মাসেই ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা দলটি শক্তিশালী ভারতকে পেয়ে বলে-ব্যাটে জ্বলে উঠে পার্থক্য গড়েই তুলে নেয় জয়। খানিকটা ব্যাকফুটে থাকা ভারতকে আরও চাপে রাখার সুযোগ কতটা নিতে পারে বাংলাদেশ সেটিই এখন দেখার।
আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে প্রথম ম্যাচে নামার আগে ‘আহত বাঘ’ ছিল বাংলাদেশ। দিল্লিতে হারের পর আতহ বাঘ এখন ভারত। রাজকোটে রোহিত শর্মার দল ঘুরে দাঁড়াতে দুর্দান্ত কিছু করতে চাইবে, সেটি আঁচ করতে পারছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
‘আমরা হয়তো কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারছি, তারা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। আরও বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চাইবে। ওরা মরিয়া হয়ে আছে, আমরাও কিন্তু মরিয়া হয়ে আছি। এটা অনেক বড় একটা সুযোগ আমাদের জন্য, আমাদের ক্রিকেটের জন্য। আমরা প্রথমবারের মতো ভারতে একটা দ্বি-পাক্ষিক (টি-টোয়েন্টি) সিরিজ খেলতে এসেছি। যদি আমরা ভালো খেলে সিরিজটা জিততে পারি আমাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন হবে এটি।’
ওয়ানডে সিরিজে একবার ভারতকে (২-১) হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেটি ছিল দেশের মাটিতে ২০১৫ সালে। ভারতের মাটিতে ভারতকে ম্যাচে হারানোর অভিজ্ঞতা প্রথম হয়েছে চলতি সিরিজেই। দিল্লির পর রাজকোটেও দলীয় প্রচেষ্টায় সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারলে যোগ হবে সাফল্যের নতুন পালক, বাংলাদেশ নাম লেখাবে বড় অর্জনে।
তাতে করে দিল্লির পর রাজকোটেও উড়বে লাল সবুজের পতাকা।