রাঙ্গুনিয়ায় ১৫৭ মণ্ডপে দুর্গাপূজা, চলছে রংতুলির আঁচড়

আর মাত্র ২দিন পরেই শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ পূজাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন চলছে রংতুলির আঁচড়ে শিল্পনৈপূণ্য ফুটিয়ে তোলার কাজ।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৫৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবছর ১৫৬টি মণ্ডপে পূজা উদযাপিত হলেও এবার দুটি মণ্ডপ পূজা হচ্ছে না। তবে নতুন তিনটি মণ্ডপে পূজা হওয়ায় গতবছরের চেয়ে এবার একটি মণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এবারের সবচেয়ে বড় মণ্ডপ হতে যাচ্ছে উপজেলার সাবেক রাঙ্গুনিয়ার মহাজনপাড়া পূজা মণ্ডপ। এ মণ্ডপে বিভিন্ন থিমে উদযাপিত হবে পূজা অর্চনা।

এছাড়াও উপজেলার আরও কয়েকটি বড় পূজামণ্ডপ হল শান্তিনিকেতন সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ, মজুমদারখীল সার্বজনীন দুর্গামণ্ডপ, চন্দ্রঘোনা গীতা ভবন, চন্দ্রঘোনা রামকৃষ্ণ কালি মন্দির, পদুয়ার জমাদর টিলা, হোচনাবাদের সাহাপাড়া, লালানগরের নাথ পাড়া দুর্গা মন্দির ও পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়ায়সহ ১৫৭টি পূজা মণ্ডপে উদযাপিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।

এদিকে ৩ অক্টোবর মহাপঞ্চমী পূজার মাধ্যমে সূচনা হবে দেবী পক্ষের এবং ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মাধ্যমে পূজা সমাপন হবে। তিথি অনুসারে ৬ অক্টোবর মহাষ্টমীতে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা ও কুমারি পূজা।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নির্বানীতোষ সাহা ভাস্কর বলেন, ‌‘এবারের পূজাকে ঘিরে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে।’

থিম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মা নবরূপ শোকহারিণী, জন্মদায়িনী, মানপ্রদায়িনী, শান্তিদায়িনী, শ্রীদায়িনী, প্রাণরূপিনী এসব রূপেই আমাদের মাঝে বিরাজমান। এ রূপেই নব মহিমাময়ী মা পূজিত হবার জন্য আমাদের মণ্ডপে অধিষ্ঠান হবেন।’

চট্টগ্রাম উত্তরজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে নির্বিঘ্ন পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ-আনসারের পাশাপাশি নিজেদের ভলান্টিয়াররাও কাজ করবে।’

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ দাশ বলেন, ‘গত বছরের ন্যায় এ বছরও উপজেলার ১৫৭টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ৩ অক্টোবর মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু হবে। ৮ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। এবার দেবীর আগমণ ও প্রস্থান হবে ঘোটকে (ঘোড়ায়)।’

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিভূতি ভূষণ সেন বলেন, ‘দুর্গা উৎসবকে ঘিরে পূজা পরিষদ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন মন্দিরে গরীব ও দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হবে। স্ব স্ব পূজা মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি সকলের সহযোগীতা চান।’

রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহসানুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা সতর্ক অবস্থানে আছে। বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।’

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৫৭টি মণ্ডপে সার্বজনীনভাবে পূজার আয়োজন করা হচ্ছে। দুর্গা উৎসবকে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সেসঙ্গে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, রাঙ্গুনিয়া থানা, পৌরমেয়র ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!