রাঙ্গুনিয়ায় জরাজীর্ণ ঘাগড়া তহসিল অফিস

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট ঘাগড়া তহসিল অফিস। ছাদের চালা চুইয়ে পানি পড়ে। মাঝেমধ্যে ছাদের আস্তর খসে পড়ে। নানা সমস্যায় জর্জরিত এ সরকারি দপ্তরটির ভবন। দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে তহসিল অফিসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতে চালা দিয়ে পানি পড়ে নষ্ট হচ্ছে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ জমির দলিলপত্র।

জানা গেছে, প্রতিবছরে এ অফিস থেকে সরকারের রাজস্ব তহবিলে জমা হয় কোটি টাকা। প্রতিবছর বর্ষা এলেই ভোগান্তিতে পড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ গলে অফিসে পানি পড়ে। এতে নষ্ট হয়ে যায় অফিসের মূল্যবান দলিলপত্র।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে তহশিল অফিসের কার্যক্রম। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে তহশিল অফিসে জমে গেছে হাঁটু পানি। আর এই পানির মধ্যেই কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সীমানা দেয়াল না থাকায় তহসিল অফিসের অনেক ভূমিও বেদখল হয়ে গেছে। তহসিল অফিসের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গন্ধ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আবার এসব ময়লা পানি থেকে মশা-মাশির উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাঝেমধ্যে ছাদের আস্তর খসে পড়ে কর্মকর্তা–কর্মচারী ও অফিসে আগত মানুষের মাথায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঘাগড়া ইউনিয়ন তহসিল অফিসটি প্রায় ৪০ বছরের ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো টিনশেডের ঘর হলেও এখনো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। সরকারিভাবে টিনশেড তহশিল অফিসটি সংস্কার কিংবা নতুন ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়নি। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৭ বছর পর রাঙ্গুনিয়া ঘাগড়া তহসিল অফিসের নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ মাসে ঘাগড়া তহসিল অফিস ভবন নির্মাণ (৬ষ্ঠ পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। ২০১৯ সালে নতুন ভবন নির্মাণকাজ শেষ না করেই পালিয়ে যায় ঠিকাদার।

হাঁটু সমান পানির ওপর দাপ্তরিক কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে ভূমির মূল্যবান দলিলপত্র।

টিনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ঘাগড়া তহসিল অফিসে। এরমধ্যেই করতে হয় দাপ্তরিক কাজ।
টিনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ঘাগড়া তহসিল অফিসে। এরমধ্যেই করতে হয় দাপ্তরিক কাজ।

উল্লেখ্য, এ ঘাগড়া তহসিল অফিসের মাধ্যমে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার লালানগর, হোছনাবাদ, রাজানগর, দক্ষিণ রাজানগর, ইসলামপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার অধিবাসী থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় হয়ে থাকে। বতমানে এই তহসিল অফিসে এক তহসিলদার দুজন সহকারী তহসিলদার ও দুজন অফিস পিয়ন কর্মরত আছেন।

ঘাগড়া তহসিল অফিসের তহসিলদার নুরুল আবচার বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এ অফিসে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অফিসের বেহাল দশার কারণে বিভিন্ন সময় বিপদে পড়তে হয় আমাদের। এ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। প্রতিবছর বর্ষার সময় এলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। তলিয়ে যায় অফিস। মূল্যবান কাজগপত্র সংরক্ষণ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।’

উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) পুরবী চাকমা বলেন, ‘ঘাগড়া তহসিল অফিসের নতুন ভবনের কাজ নির্মাণাধীন। কেন দেরি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।

ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।

এদিকে ঠিকাদার বাবলা বড়ুয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!