রাঙ্গামাটির দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

রাঙ্গামাটির দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ 1রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটি শহরের বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনতোষ মল্লিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কোচিং এর নামে বিনা রশিদে আবার এসএসসি ফরম পুরুনে বাড়তি টাকা নেওয়া অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিষদের সাথে সালিশ বৈঠক করেছে রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন।

৭ আগষ্ট রোববার সকাল ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে এডিএম বলেন, অনিয়মের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। এবার থেকে এক টাকা নেওয়া হলে তা রশীদের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অফিস সহকারী বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মতে আমি টাকা নিয়েছি। কিভাবে নেব, তার নির্দেশনা সহ একটি কাগজ আমাকে ধরিয়ে দেয়। সে হিসেবে নাম লিপিবদ্ধ করে টাকা নিয়ে এ টাকা ও কাগজ প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়েছি। এ টাকাগুলো তার কাছে দিয়েছি বলে এতদিন শান্তিতে ছিলাম। এখন অভিযোগ উঠার পর আমার উপর দায় ছাপাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। কোচিং ফি আমি নিই নি। যাদের বকেয়া ছিল সেগুলো কেটে রাখতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছি ।
শুনানীর সূত্র জানায়, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বৈঠকে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন। বলেন, বাড়তি টাকা দেওয়া হয়নি। তিনি সনদপত্র নেওয়ার সময় টাকা নেননি। এগুলো অফিস সহকারী নিয়েছে। সাথে সাথে প্রতিবাদ করেন অফিস সহকারী বলেন, আমি যা নিয়েছি সেগুলো প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে দিয়েছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ, ২০১৭ সালে বিদ্যালয় থেকে ১৩০ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তাদের কাছ থেকে ফরম ফিলআপ বাদ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩,২০০ টাকা। মানবিক ও ব্যবসায়ী শিক্ষা থেকে ৩,০০০ টাকা নেয়। অথচ বোর্ড নির্ধারিত যথাক্রমে ১,৮৫০ ও ১,৭৫০ টাকা। প্রতিবাদ করা হলে প্রধান শিক্ষক এ টাকা কোচিং ফি বাবদ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার প্রবেশ পত্র নেওয়ার সময় আবার প্রতি পরীক্ষার্থীকে ১,০০০ টাকা কোচিং ফি দিতে হয়। পরীক্ষায় ১০৩ জন পাশ করার পর পাশের সনদ, নম্বরপত্র ও বিদ্যালয়ের প্রশংসাপত্র আনতে গিয়ে আবারো ৩শ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু এগুলোর কোনটির রশীদ দেওয়া হয়নি। এর এসব অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকে কাছে একটি অভিযোগ দেয়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সালিশ হয়।
চট্টগ্রাম প্রতিদিনের প্রতিবেদক মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক রনতোষ মল্লিক বলেন, এসব অভিযোগ একটি মহলের সুগভীর ষড়যন্ত্র । এগুলো সত্য নয়। সনদ বাবদ ৩শ টাকা নিয়েছি এটি ঠিক। নেওয়ার কারণ হল তখন রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের দুর্যোগ ছিল। কষ্ট করে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব কাগজ চট্টগ্রাম থেকে এনে দিয়েছি। তাই নিয়েছি। শুধু ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে। তবে টাকাগুলো আমার হাতে আসেনি। তার দাবী বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য তিনি অনেক কষ্ট করছেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিদ্যালয় থেকে এ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অভিযোগ পত্রে যাদের নাম আসলে তারা দেয়নি। তাদের হয়ে অন্যরা দিয়েছে।
অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করা সোহাগ খীসা, নেপাল চাকমা, শাক্যমুনি চাকমা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য ঠিক নয়। তিনি শুধু আমাদের কাছ থেকে নয় সবার কাছ থেকে সব সময় বাড়তি টাকা নেয়। দুর্গম এলাকা থেকে গরীব ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসে। প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫শ/এক হাজার কিছু না হলেও আমাদের জন্য অনেক টাকা। বিদ্যালয় তথ্যমতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণী পর্যন্ত ১০৫০ জন শিক্ষার্থী আছে বিদ্যালয়ে ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!