রাঙ্গামাটির কুদুকছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ

রাঙ্গামাটির কুদুকছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ 1রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা সদর এলাকার তিন টিলা, কাট্টলাপাড়া, বাত্তে পাড়া সহ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে সেটলাররা আকস্মিকভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা করে তিন শতাধিক বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ৭০ বছরের বৃদ্ধাকে আগেুনে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে আজ ২জুন বিকাল ৩ টায় তিন সংগঠন (পিসিপি, ডিওয়াইএফ ও এইচডব্লিউএফ)’র উদ্যোগে কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শুরুতেই বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কুদুকছড়ি বড় মহাপুরুম উচ্চ বিদ্যালয় গেইট থেকে শুরু হয়ে বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে পুনরায় স্কুল গেইটে এসে এক প্রতিবাদি সমাবেশে মিলিত হয়।

প্রতিবাদি সমাবেশে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙ্গমাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কংচাই মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা বক্তব্য প্রদান করেন। সমাবেশটি গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ধর্মশিং চাকমা সভাপতিত্বে পরিচালনা করেন পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক জয়ন্ত চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা উদ্ধেগ প্রকাশ করে বলেন, আজ ২জুন সকালে ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক চালক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ নিয়ে সেটলাররা রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা সদরে জঙ্গি মিছিল বের করে এবং সেই মিছিল থেকে সেটলাররা পরিকল্পিতভাবে উপজেলা সদর এলাকা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলা করে জেএসএস(সন্তু) অফিস, সদর ও আটরকছড়া ইউপি চেয়ারম্যানদ্বয়ের বাড়ি সহ প্রায় তিন শতাধিক পাহাড়িদের বসতবাড়িতে ভাংচুর, মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে অগ্নিসংযোগ করে। পুড়িয়ে হত্যা করে ৭০ বছরের এক পাহাড়ি বৃদ্ধাকে।

বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের নীরব ভুমিকা এবং সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে সেটলাররা পাহাড়িদের উপর এই সাম্প্রদায়িক হামলা করেছে।১৪৪ ধারা জারির পরও উগ্র সেটলাররা তা উপেক্ষা করে এবং প্রশাসনের সম্মুখেই পাহাড়িদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। অথচ পুলিশ প্রশাসন ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারীদের উপর আইনি ব্যবস্থা প্রয়োগ না করে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচের ন্যায় অগ্নিসংযোগের দৃশ্য উপভোগ করে। সেজন্যেই সেটলারদের সাম্প্রদায়িক হামলার দায় প্রশাসনের উপরও বর্তায়।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অনতিবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে এযাবতকাল সংঘটিত প্রত্যেক সাম্প্রদায়িক হামলায় অংশগ্রহণ করে মূল ভূমিকা পালনকারী সেটলার ও নেপথ্যে থেকে হামলায় মদদ দেয়া সেনাবাহিনীদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার সহ সেটলাদের সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেক পরিবার ও এলাকা উচ্চতর ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যেমে তদন্ত, সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক সকল ক্ষতিগ্রস্থদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং হামলাকারীদের বিচার ও শাস্তির জোর দাবি জানান।

উল্লেখ্য, লংগদু উপজেলায় ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক চালক নুরুল ইসলাম নয়নকে কে বা কারা খুন করে খাগড়াছড়ি-দিঘীনালা সড়কের চার মাইল এলাকায় রেখে দেয়।গত ১ জুন রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনীরা নয়নের লাশের সন্ধায় পায়। উক্ত লাশ সমেত লংগদু এলাকাবাসীর ব্যানারে আজ সকাল ৯ টায় সেটলাররা লংগদু উপজেলা সদরে জঙ্গি মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকেই পরিকল্পিতভাবেই এ সাম্প্রদায়িক করে পাহাড়িদের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!