রাঙ্গামাটিতে বিশেষ অভিযানে পিসিপির ১৪কর্মী আটক

রাঙ্গামাটিতে বিশেষ অভিযানে পিসিপির ১৪কর্মী আটক 1রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটির চার উপজেলায় দুই হত্যা ও দুই হামলার ঘটনায় জড়িত ধরতে পাহাড়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু । বৃহষ্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অভিযানে পুলিশ বিলাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১৪জন পিসিপির সক্রিয়কর্মী আটক করেছে।
বিলাইছড়ি ও কোতয়ালী থানার দুটি পৃথক মামলায় তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন বিলাইছড়ি থানার মামলায় বিলাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান শুভমঙ্গল চাকমা (৬৫) ও তার ছেলে সমর বিজয় চাকমা (২৮), সুমন চাকমা (২৬), চন্দ্র বাবু তঞ্চঙ্গা (৩৫), বীরময় চাকমা (৩৫), সুনীল কান্তি চাকমা (৪০), বুদ্ধি বিজয় তঞ্চঙ্গা (৩২) এবং কোতয়ালী থানার মামলায়- রিটন চাকমা (২৬), বাবু চাকমা (২৭), মঙ্গল মণি চাকমা (২৬), সাধন চাকমা (২৭), রিকন চাকমা (২৮), কালনজিৎ চাকমা (২৯) ও রূপম চাকমা (২৪)।
আটক সবাইকে শুক্রবার বিকেলে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। আদালত মামলার পরবর্তি দিন ধার্য করে তাদের জেল হাজতে প্রেরনে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ইনচার্জ সত্যজিৎ বড়–য়া জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঝরনা খীসার ওপর হামলার ঘটনায় বিকালে নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা দেন ঝরনা খীসা। মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে পরিচালিত পুলিশি অভিযানে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রাসেল মারমার ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় একই রাতে রাঙামাটি শহরের রাঙ্গাপানি এলাকা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান শুভমঙ্গল চাকমা ও তার ছেলে সমরজিৎ চাকমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিলাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম মোল্লা জানান, রাসেল মারমা নিজে বাদী হয়ে বিলাইছড়ি থানায় একটি মামলা করার পর ওই মামলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা সদরের বিভিন্ন জায়গায় পরিচালিত পুলিশি অভিযানে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া এ মামলায় রাঙ্গামাটি শহর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সাইদ মো.তারিকুল হাসান বলেন, নানিয়ারচরে সাবেক ইউপি সদস্য অনাদী রঞ্জন চাকমা এবং জুরাছড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অরবিন্দু চাকমা হত্যার ঘটনায় তাদের পরিবার থেকে কেউ মামলা না দেয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে নিজ নিজ থানায় মামলা রুজু করে। এ ছাড়া দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার রাসেল মারমা এবং ঝরনা খীসা নিজ নিজ থানায় মামলা দেন। ওইসব মামলায় এরই মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। অভিযানে অনেককে গ্রেফতারে সক্ষম হওয়া গেছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য গত ৫ ডিসেম্বর জেলার বিলাইছড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রাসেল মারমাকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বেদম শারিরীক নির্যাতন চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে মারাত্মক আহত হন রাসেল মারমা। একই দিন রাতে জুরাছড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগের সহ-সভাপতি অরবিন্দু চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ছাড়া ৫ ডিসেম্বর সকালে আরেকটি পৃথক ঘটনায় নানিয়ারচর উপজেলার দোজরপাড়ায় অনাদী রঞ্জন চাকমা নামে এক সাবেক ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এসব ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেয়ায় বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার সময় রাঙ্গামাটি শহরের ভালেদী আদম এলাকায় মুখোসপড়া নিজ বাড়িতে প্রবেশ করে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঝরনা চাকমার ওপর এলোপাতারি হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয় ঝরণাকে । বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাসেল ও ঝরনা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!