রাঙ্গামাটিতে ধর্মঘটকে ঘিরে টান টান উত্তেজনা

রাঙ্গামাটিতে ধর্মঘটকে ঘিরে টান টান উত্তেজনা 1রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে রমেল চাকমার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে টান টান উত্তেজনায় রাঙ্গামাটিতে অবস্থান ধর্মঘট পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা প্রহরার মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান ধর্মঘটের কর্মসূচি পালিত হয়।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও রমেল চাকমা হত্যা প্রতিবাদ কমিটিসহ ইউপিডিএফ সমর্থনপুষ্ট ৮ সংগঠন এই কর্মসূচি পালন করে। ঘন্টাব্যাপী অবস্থান ধর্মঘট শেষে জেলা প্রশাসকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপিও পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউপিডিএফ সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠন পিসিপির নানিয়ারচর থানার সাধারণ সম্পাদক ও নানিয়ারচর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকে ৫ এপ্রিল জেলার নানিয়ারচর উপজেলা সদর থেকে আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী। পরে অসুস্থ হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ এপ্রিল মারা যান তিনি। ঘটনাটিকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার পুলিশসহ নিরাপত্তাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে কর্মসূচি ঘিরে সকালের দিকে শহরসহ আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, কর্মসূচিতে যোগ দিতে সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। বাধা উপেক্ষা করে আসার কারণে কর্মসূচি দেরিতে পালন করতে হয়েছে। এ ছাড়া বাধার কারণে অনেক লোকজন অবস্থান ধর্মঘটে যোগ দিতে পারেনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে পাঠানো স্মারকলিপিতে দাবি করে বলা হয়েছে, রমেল চাকমার মৃত্যু হয়েছে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতনে। আটকের পর তার ওপর অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এতে সে গুরুতর আহত হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করানোর পর শেষে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মরদেহটিও স্বজনদের কাছে দেয়া হয়নি।
এতে আরও অভিযোগ করে উল্লেখ করা হয়, রমেল চাকমাকে ট্রাক পোড়ানো ও বাস লুটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলা হলেও নানিয়ারচর থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। কোনো অভিযোগ থাকলেও তার সুবিচার পাওয়া অধিকার ছিল। অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে তাকে মেরে ফেলার কারও কোনো ক্ষমতা নেই। কিন্তু রমেল চাকমাকে নির্মম নির্যাতনে মারা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন বিচাররবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, বিচারের আওতায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, রমেল চাকমার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ চারদফা দাবি জানানো হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি কুনেন্টু চাকমা, রমেল চাকমা হত্যা প্রতিবাদ কমিটির আহবায়ক সুনন্দা তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক সান্ত্বনা কারবারি, বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ বিকাশ খীসা ও ওয়ার্ড মেম্বার অংসাপ্রু মারমা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!