রাঙামাটিতে সেই ৫ গ্রামের ‌‘লকডাউন’ ব্যারিকেড গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের নামে রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরীণ পাঁচটি সড়কে গ্রামের মুখে ‘লকডাউন’ করা ব্যারিকেডগুলো গুড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রাঙামাটির নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) উত্তম কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে এসব ব্যারিকেড গুড়িয়ে দেন।

তবে সড়কে ব্যারিকেড দেওয়ার বিষয়টিকে ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘অতি উৎসাহীদের বাড়াবাড়ি’ বলে দাবি করেছেন অনেকেই।

‘সরকার বা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এভাবে কোনো রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। বিষয়টি যাচাই করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের এমন ঘোষণার পরই শনিবার রাতে এ অভিযান চালানো হয়।

শহরের গর্জনতলী, পশ্চিম ট্রাইবেল আদাম, পাবলিক হেলথ, বনবিহারে প্রবেশ পথে কেকে রায় সড়ক, চম্পনগর এলাকায় সড়কে ব্যানার টাঙিয়ে বাঁশ ও গাছ দিয়ে এই ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এতে জরুরি প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের চলাচল মারাত্মক ব্যাহত হয়। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গত দুইদিন ধরে এসব এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যান ও জনচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে নোটিশ টাঙিয়ে ‘বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি’ করা হয়েছে। নোটিশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

শহরের গর্জনতলী এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে ওই এলাকায় চলাচলের সড়কটি বন্ধ করে দেয়, ‘বলাকা ক্লাব’ নামে স্থানীয় একটি সংগঠন। সেখানে প্রকাশ্যে নোটিশ টাঙিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে ওই রাস্তা দিয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধ। অমান্যকারীদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’। এর পর থেকেই অন্য চারটি এলাকায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ‘লকডাউন’ ঘোষণা দেন স্থানীয়রা।

রাঙামাটির বনরূপা ‘ছদক’ ক্লাবের সভাপতি রিন্টু চাকমা বলেন, ‘করোনা নিয়ে অতি উৎসাহীরা বাড়াবাড়ি করছেন। এটা ঠিক না। কেউ জন ও যানবাহন প্রবেশ বন্ধ করে দিতে পারে না’।

রোববার (২৯ মার্চ) দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গর্জনতলীর মুখে টানানো ‘লকডাউন’ ব্যানারটি নেই, অপসারণ করা হয়েছে ব্যারিকেডও। বনবিহারে প্রবেশ পথে কেকে রায় সড়কে ব্যারিকেড-ব্যানার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে পাশেই রাখা সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে মানুষ চলাচল করছে। অন্য তিনটি সড়কেও ব্যারিকেড অপসারণ করা হয়েছে।

‘গ্রামের নিরাপত্তার স্বার্থেই লকডাউন করা হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গর্জনতলীতে ব্যারিকেড দেওয়া ‘বলাকা’ ক্লাবের সভাপতি ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা কোথাও যাবো না, কাউকে আসতেও দেবো না। করোনা ভাইরাস ছড়াতে না পারে সেজন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে লকডাউন করা হয়েছে’।
রাঙামাটিতে সেই ৫ গ্রামের ‌‘লকডাউন’ ব্যারিকেড গুড়িয়ে দিল প্রশাসন 1

পশ্চিম ট্রাইবেল আদামের বাসিন্দা সুমন চাকমা বলেন, ‘গ্রামের মানুষের নিরাপত্তার জন্য এটা করা হয়েছে’।

বনবিহারে প্রবেশ পথে কেকে রায় সড়কের দোকানদার সমিতির সদস্য তপন দে ও প্রদীপ দাশ বলেন, ‘এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে প্রবেশ পথ বন্ধ করেছি। গ্রামের লোকজন হাত ধুয়ে প্রবেশ করবে’।

এনডিসি উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে, সড়কে ব্যারিকেড দিতে নয়। অতি উৎসাহী হয়ে বাড়াবাড়ি করে কেউ সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটালে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!