রাঙামাটিতে বিধ্বস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাড়িঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা!

রাঙামাটিতে বিধ্বস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাড়িঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা! 1রাঙামাটি প্রতিনিধি : ১৩ জুন (মঙ্গলবার) পাহাড় ধসের বিপর্যয়ে সদরসহ রাঙামাটি জেলায় এ পর্যন্ত সর্বশেষ ১১৮ জনের মৃত্যুর ঘোষণা করা হয়েছে। তালিকায় নিখোঁজ আরও ৩ জনের নাম যোগ হয়েছে। এর আগে ১১৫ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ায় ওই তিন জনের নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে বলে জানান, জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেয়া এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ভেদভেদীর পশ্চিম মুসলিম পাড়ায় শাহজাহান (২৬) ও রুবি আক্তার (২২) নামে আরও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান, ব্রিফিংয়ে উপস্থিত থাকা রাঙামাটি পৌরসভা মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী। এছাড়াও ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় শহরের ভেদভেদীর রূপনগর এলাকায় সালাউদ্দিন (৩০), তার স্ত্রী রায়মা বেগম (২৫) ও তাদের শিশুসন্তান দরবেশ নিখোঁজ হন। সর্বশেষ তথ্যে তাদের বাড়িঘর বিলীন হয়ে তারা মাটির চাপায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু প্রতিকুল অবস্থার কারণে তাদের লাশ উদ্ধার সম্ভব করা হয়নি। তাই তাদের নাম মৃতের তালিকায় যোগ করে ক্ষতিপূরণের অর্থ-সহায়তা দেয়া হয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোয়াজ্জেম হোসেনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পাহাড় ধসের ঘটনায় সদরসহ গোটা জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১৬০০-১৭০০ পরিবার। তাদের মধ্যে সদরে রয়েছেন ১১৩০ পরিবার। পাহাড় ধসের ঘটনায় পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত অথবা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা বিধ্বস্ত ভিটায় এবং পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে কোনো বাড়িঘর বা স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মানুষের ভবিষ্যৎ জানমাল রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে বিশেযজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ যাচাই বাছাই ছাড়া কাউকে আর মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া ঠিক হবে না।
জেলা প্রশাসক জানান, পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সহায়তা হিসেবে মৃতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার এবং ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের নগদ ৫ হাজার এবং ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝঁকিতে থাকা লোকজনকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। শহরে মোট ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ৬৪৩ পরিবারের নারী, শিশু, পুরুষ মিলে ২ হাজার ৯০০ জন আশ্রয়ে এসেছেন। আশ্রিতদের সংখ্যা সার্বক্ষণিক বাড়ছে। নিরাপত্তার জন্য প্রতিদিন আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে লোকজন।
তিনি জানান, আশ্রিতদের জন্য দুই বেলা খাবারসহ নিরাপদ পানি সরবরাহ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা, লুঙ্গি, শাড়ি, কাপড়সহ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। তাদের সহায়তায় প্রয়োজনীয় সব কিছুর সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্গতদের কেউ সহায়তা করতে চাইলে ত্রাণ না দিয়ে নগদ টাকা দিতে পারবেন। এজন্য ইসলামি ব্যাংকের রাঙামাটি শাখায় মানবিক সহায়তা তহবিল নামে একটি হিসাব শাখা (নম্বর-২৮১৩) খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগের আশঙ্কা থাকলেও সার্বিক পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দুর্যোগের পর সৃষ্ট বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি তেল, বাজার পরিস্থিতিসহ প্রায় সংকট মোকাবেলা করে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ সচল করতে দ্রুত কাজ চলছে। যে কোনো সময় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সাময়িকভাবে হালকা যান চলাচল উপযোগী করা যাবে।
উল্লেখ্য পর্যন্ত ত্রাণ দেয়া হয়েছে । আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়া অনেকে ত্রাণ দিতে দেখা গেছে ! প্রকৃত পক্ষে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে না । আজ কয়েকনি ধরে সেনাবাহিনী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পানীয় জল উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করতে খো গেছে ।
জেলা প্রশাসক ত্রাণ দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে আরো ২শ মেট্রিক টন চাউল ও নগদ পুর্ণবাসনের জন্য ১ কোটি টাকা য়ো হয়েছে জানাগেছে । জেলা পরিষদ পক্ষ থেকে নিহতরে প্রতিটি লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা জেলা প্রশাসক ২০ হাজার টাকা ৩০ কেজি করে চাউল প্রান করা হয়েছে ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!