রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল, জমে উঠেছে ব্যবসাও

রাঙামাটিতে এখন পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। সবুজের হাতছানিতে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটছেন রাঙামাটি। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পরিবহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পোশাক ও স্থানীয় উৎপাদিত পণ্য-সামগ্রী বিপণীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য। এর ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরীণ একমাত্র যানবাহন অটোরিক্সা ও নৌযান চালকেরাও। বিক্রি বেড়েছে মৌসুমী ফল কমলা ও পাহাড়িদের তৈরি তাঁতের কাপড়ের। এতে সাময়িকভাবে চাঙ্গা হয়েছে রাঙামাটির অর্থনীতিও।

এমনিতেই সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে রাঙামাটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। বিশেষ করে রাঙামাটির পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। এর বাইরে সুভলং ঝরনা, আরণ্যক হলিডে রিসোর্ট, পলওয়েল পার্ক, সুখী নীলগঞ্জ এবং রাজবন বিহার এলাকায় পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

হ্রদ ঘিরেই আনন্দ
হ্রদের সুবিশাল স্বচ্ছ জলরাশি মন কাড়ে পর্যটকের। আলো ছায়ার খেলায় মত্ত সাদা মেঘের ভেলা পাহাড়মালার সাথে মাখামাখি আর লুটোপুটিতেই যেন মাতোয়ারা। আর পূর্ণিমা রাতে মৃদু উত্তেজনায় আঁছড়ে পড়া ঢেউয়ের উপর জোছনার ঝলকানিতে আপ্লুত আপনি অনায়াসেই হারিয়ে যেতে পারেন স্বপ্নের রাজ্যে।

এলোমেলো সারিতে সাজানো উঁচু-নিচু আর ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের সমাবেশ। যে দিকে চোখ যায় স্বচ্ছজল আর বিস্তীর্ণ সবুজের হাতছানি। সবুজ পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে অসংখ্য উচ্ছল ঝরনাধারা। নৈসর্গিক লীলাভূমি পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি যেন শিল্পীর হাতে আঁকা নিখাঁদ জীবন্ত ছবি- মন হারায় নিমিষেই।

প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পর্যটক যান্ত্রিক শহুরে ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসেন রাঙামাটি। বিনোদনের খোঁজে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের আনন্দ আর উচ্ছলতা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ভুলিয়ে দিচ্ছে জীবনের নানান জটিলতা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের উপচেভিড় থাকে। শহরের পর্যটন স্পট ঝুলন্ত সেঁতু, সুভলং ঝরনা, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, সুখী নীলগঞ্জ এবং রাজবন বিহার এলাকায় প্রতিনিয়ত ভিড় জমান বেড়াতে আসা পর্যটকরা।

শহরের দোয়েল চত্ত্বরের আবাসিক হোটেল ‘প্রিন্স’ এর মালিক মো. নেছার আহম্মেদ বলেন, ‘এবার প্রত্যাশার বাইরে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটেছে। ২৬ ডিসেম্বর থেকেই পর্যটকেরা সবগুলো কক্ষই বুকিং দিয়ে রেখেছেন আগামী ৩ মে পর্যন্ত।’

রিজার্ভবাজারের আবাসিক হোটেল ‘ড্রিমওয়ে’ এর মালিক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এখন প্রতিদিনই পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়ছে চোখে পড়ার মতো।’

পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স রাঙামাটির ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘প্রতিদিনই ঝুলন্ত সেতুর দর্শণার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। পরিবার নিয়েই পর্যটকেরা এখানে আসছেন।’

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মাকসুদ আহম্মদ বলেন, ‘এবার মৌসুমে রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভিড় জমছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ রয়েছে।’

রয়েছে নানান সুবিধা
রাঙামাটি শহরে বেসরকারি ৪২টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। প্রতিদিন ৩ হাজার অতিথি হোটেল-মোটেলে থাকতে পারেন। পর্যটকদের আগমন ঘিরে নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরাও। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পর্যটক যান্ত্রিক শহুরে ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসেন রাঙামাটি। বিনোদনের খোঁজে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের আনন্দ আর উচ্ছলতা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ভুলিয়ে দিচ্ছে জীবনের নানান জটিলতা।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!