রাঙামাটিতে অপহৃত ছাত্রলীগ নেতার খোঁজ মেলেনি ১০ দিনেও

মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন স্থানীয়দের

রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে ‘অপহরণের’ ১০ দিনেও সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করছে তার পরিবার।

এদিকে অপহরণের শিকার মো. সালাহ উদ্দিনের (২৬) নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ মাঠে ‘বাঙ্গালহালিয়া সচেতন নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সালাহ উদ্দিন নিঃশর্ত মুক্তি দিতে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।

অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কর্মসূচি থেকে। মানববন্ধনে বাঙ্গালহালিয়া ইউপি সদস্য এমদাদুল হক মিলনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাঙ্গালহালিয়া সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এম রেজাউল আলম, যুবনেতা মাসুম সর্দার, কাইয়ুম হোসেন মিরাজ, সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদন, শফিকুল ইসলাম মিঠু, জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় মুরুব্বি আব্দুল জলিল মোড়লসহ আরও অনেকেই।

মানববন্ধন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উদযাপিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে অনেকেই অংশগ্রহণ করেছে। এর দুইদিন পরই সালাহ উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জনসংহতি সমিতি জড়িত। অপহরণের পর দীর্ঘ ১০ দিন কেটে গেলেও আমরা এখনো তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। যদি সালাহ উদ্দিনকে মুক্তি দেওয়া না হয় কিংবা জীবিত ফেরত দেওয়া না হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন করব। এসময় তারা বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন।

‘অপহৃত’ মো. সালাহ উদ্দিন বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও শফিপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে। সালাহ উদ্দিন উপজেলা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও পেশায় একজন স্ক্যাভেটর চালক।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর রোববার সকালে রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের আমতলীপাড়া এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে পরিবার দাবি করেছে।

পরিবার এ ঘটনায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) দায়ী করে আসছে। ঘটনার পরদিন ৫ ডিসেম্বর রাজস্থলী থানায় নিখোঁজ দাবি করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সালাহ উদ্দিনের বড় ভাই মো. আল আমিন হোসেন।

সালাহ উদ্দিনের ভাই ও উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফোরকান হোসেন মুন্না বলেন, ‘আমার ভাইকে অপহরণের পর দীর্ঘ ১০ দিন কেটে গেছে। এখনো ভাইয়ের কোনো সন্ধান পাইনি৷ আমরা ভাইয়ের সন্ধান চাই, আমাদের ভাইকে হারাতে চাই না। জেএসএস এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো যোগাযোগ কিংবা মুক্তিপণ দাবি করেনি। আমরা নিশ্চিত তাকে জেএসএসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছে।’

এদিকে বাঙ্গালহালিয়া সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এম রেজাউল আলম, ‘যে এলাকা থেকে সালাহ উদ্দিন নিখোঁজ হয়েছে, সেটা জেএসএসের ঘাটি। এই অপহরণে তারাই জড়িত। আমরা তাকে উদ্ধারে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটান দিয়েছে, অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।’

তবে অপহরণের অভিযোগ প্রসঙ্গে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!