করোনাকালে পুরো রমজান মাসজুড়ে প্রায় ৬ হাজার সুবিধাবঞ্চিত ও কর্মহীন মানুষের মুখে সেহেরি ও ইফতার তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা নাজিমুদ্দিন চৌধুরী এ্যানেল। করোনাকালে এমন মানবিক কার্যক্রম ইতোমধ্যে সবার মাঝে সাড়া ফেলেছে। কুড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের প্রশংসা। প্রতিদিন দুপুর থেকে সংগঠনে কর্মীরা ইফতার ও সেহেরি রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷
নাজিম উদ্দিন এ্যানেল ইফতার ও সেহেরি নিজেই রান্না করেন। এছাড়া প্যাকেজিং থেকে বিতরণে স্বেচ্ছায় সেবা দেন পিয়াল রহমান, এম আওলাদ হোসেন, সাকিল আল মামুন, ইফতেখার তৈয়ব, এম জাহিদ, আবুল হাসনাত মানিক, ইয়াসিন আরাফাত মুন্না, ফরিদুল আলম, মাসুদুল আলমসহ আরো অনেকে।
রান্না শেষে ১১ পদের ইফতারি প্যাকেট নিয়ে নগরের মোড়ে হাজির হন সংগঠনের সদস্যরা। এরপর সড়কের একপাশে কিংবা ডিভাইডারে সাজানো ইফতারি প্যাকেট হাতে নিয়ে যান যে যার মতো করে। ইফতারির প্যাকেটে রয়েছে- চিকেন রোল, চিকেন সমুচা, অন্থন, শাহী জিলাপি, ছোলা, বেগুনি, পেঁয়াজু, খেজুর, মুড়ি পানিসহ ১১ পদ। আর সেহেরির মেন্যু- সাদা ভাত, চিকেন মাসালা, ডিম ও মুগ ডাল ফ্রাই।
নগরের লালখানবাজার, কাজিরদেউরি, বায়েজিদ লিংক রোড, আরাকান রোড, দুই নাম্বার গেট, বহাদ্দারহাট টু খাজা রোড, জামাল খান মোড়, লালদীঘির পাড় থেকে নতুন ব্রিজসহ নগরের বিভিন্ন স্থানে ইফতারি ও সেহেরির প্যাকেট সুবিধাবঞ্চিত ও কর্মহীন মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তিনি রাউজান আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রসহ ৭টি এতিমখানা ও উপলব্ধি নামের একটি এনজিওতে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ইফতার আয়োজন করেন।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে সাতকানিয়া এলাকায় বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা হলেও ২০০২ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে মানবিক কার্যক্রম চালু করে। নাজিম উদ্দীন চৌধুরী এ্যানেলের নেতৃত্বে সংগঠনের একঝাঁক তরুণ প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোনো দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।
এ ব্যাপারে নাজিম উদ্দীন চৌধুরী এ্যানেল বলেন, করোনাকালে ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় তেমন আয় নেই। প্রতিদিন শহরে চলাচলের সময় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মানুষগুলোর অসহায় মুখের দিকে তাকালে তাদের জন্য ভালো কিছু করার ইচ্ছে জাগে। তাই মানবিক কার্যক্রমে এগিয়ে আসা। আমরা প্রতিদিন ৩০০ জন লোকের মাঝে সেহেরি ও ইফতার তুলে দিয়েছি। মানুষ মানুষের জন্য। আমাদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে পারার মাঝে একধরনের বেহেশতি সুখ রয়েছে। প্রতিবার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমি এই সুখ অনুভব করি।
সিএম/কেএস