রং-বেরঙের ছাতায় ঢেকে দখল হয়ে গেলো চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকার ফুটপাত

বিশাল গ্যাসের সিলিন্ডার। পাশেই দাউ দাউ জলছে চুলা। তার উপর চাপানো আছে বড় মাপের হাঁড়ি। এটিতে রান্না হচ্ছে ভাত। পাশের চুলায় মুরগীর মাংস। টেবিলের উপর সাজানো আছে বিভিন্ন পদের মাছ, সবজি, ডালও। চেয়ার-টেবিল বসানো হয়েছে সারি সারি। পাশেই আরেকজন একই কায়দায় জ্বালিয়েছেন চুলা। ভাজছেন তিনক ডিম-পরোটা ভাজছেন। রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে সাটানো হয়েছে রং-বেরঙের ছাতাও। শত শত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, পথচারীই বসে খাচ্ছেন তৃপ্তি নিয়ে।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ দখল করেই রীতিমতো তৈরি করা হয়েছে খাবার হোটেল!

একটি-দুটি নয়, প্রায় অর্ধশতাধিক হোটেলের দখলে ঢাকা পড়েছে নগরীর অন্যতম ব্যস্তসড়ক স্টেশন রোডের ফুটপাত, দখল হয়েছে রাস্তাও।

অবাক করা বিষয় হলো, এসব দোকানে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। চলে বাতি, ফ্যান।

রেলস্টেশন থেকে নামলেই ডানে-বামে নির্মিত ফুটপাত কারও চোখেই পড়বে না। কারণ এসব ফুটপাত এখন হোটেলে পরিণত হয়েছে। উপরে আছে রঙ-বেরঙের ছাউনিও।

অভিযোগ উঠেছে, হকার সমিতির সভাপতি মিরন, রেলওয়ের বেসরকারি সিসিলন কোম্পানির ইনচার্জ মান্নান এই ফুটপাত ভাড়া দিচ্ছে। পুলিশের সোর্স পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তিকে দৈনিক চাঁদা দিয়ে বসানো হচ্ছে এসব অবৈধ দোকান।

এ বিষয়ে সিএমপি’র ট্রাফিক এডমিন (দক্ষিণ) অনিল চাকমা বলেন, ‘আমরা প্রায় সময় এসব দোকান তুলে দিই। ভাসমান এ দোকানগুলো যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাড়ায়। আর ট্রাফিকের কেউ এসবের সাথে জড়িত থাকার সুযোগ নেই। কারণ দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যরা ঊর্ধ্বতন অফিসারদের মনিটরিংয়ের উপর থাকে প্রতিনিয়ত।’

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে প্রবেশের দুই পাশের ফুটপাতে আছে লাল, হলুদ, বেগুনি রংয়ের ছাতা। এসব ছাতার নিচেই পসরা নিয়ে বসেছে হকাররা। রেলের পার্কিংয়ের রাস্তা বন্ধ বললেই চলে। গেটের সামনে রাস্তায় আসছে সিটিবাস, হিউম্যান হলার, রিক্সা এবং টেম্পুর স্ট্যান্ড। রেলস্টেশনে প্রবেশ পথ মোটামুটি অবরুদ্ধ।

এক দোকানদার জানায়, হকার সমিতির সভাপতি মিরন বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দিয়েছে। তার ইশারায় বসে এসব দোকান।

ট্রাফিক ও থানা পুলিশের ক্যাশিয়ার পরিচয় দিয়ে হারুন নামে এক ব্যক্তি হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে।

হকার সমিতির সভাপতি মিরনের কাছে অবৈধ দোকান ও বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘সিটি কপোরেশনের সাবেক মেয়র বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত হকারদের বসার অনুমতি দিয়েছে। পিডিবির মিটার নিয়েই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় এসব দোকানে।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, ‘থানার নাম দিয়ে কেউ চাঁদা চাইতে গেলে তাকে আটকে রেখে থানায় খবর দিতে হবে। আমরা সাথে সাথে আইনী ব্যবস্থা নেব।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!