যৌতুক না পেয়ে গর্ভবতী গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতন করে তিন মাসের গর্ভবতী তানিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

বুধবার (১১ জুলাই) দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূ মারা যান। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার এক নম্বর ওয়ার্ড সিলেটি পাড়ার জসিম মাস্টারের বাড়ির আব্দুর রহমান মিনার স্ত্রী। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্মী এক নম্বর ওয়ার্ডের আমির বলির বাড়ির নুরুল ইসলামের মেয়ে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছয় মাসে আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। স্বামী টেইলারিংয়ের কাজ করতেন। বিয়ের পর থেকে স্বামীকে নিয়ে কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামী আব্দুর রহমান মিনাকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল তার গ্রামের বাড়িতে ঘর নির্মাণ করার জন্য। কিন্তু এরপর থেকে স্বামী মিনা আরও টাকা দাবি করতে থাকেন। জানা যায়, ছয় মাস আগে তানিয়াকে নিয়ে তার স্বামী মিনা শিকলবাহার বাসা ছেড়ে আলিকদমে চলে যান। এরপর থেকে শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য তানিয়াকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

জানা যায়, গত ৫ জুলাই নির্যাতনে অসুস্থ তানিয়াকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আলিকদম থেকে হানিফ পরিবহনের একটি গাড়িতে তুলে দেয় একা। মোবাইলে তারা তানিয়ার বাবাকে মেয়েকে চট্টগ্রামের মইজ্জারটেক এলাকা থেকে নেওয়ার জন্য জানায়। ওই গাড়ি থেকে মেয়েকে নেওয়ার সময় দেখা যায়, তানিয়ার গায়ে জ্বর, কাশি। সেই সঙ্গে পুরো শরীরে ব্যথা। এরপর তাকে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তানিয়া শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা জানান পরিবারকে।

তিন মাসের গর্ভবতী তানিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। একপর্যায়ে অবস্থার গুরুতর অবনতি ঘটলে গত ৯ জুলাই রাতে তানিয়াকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরদিন দুপুর একটার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের চাচা আমির আহমেদ জানান, ‘শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আঘাতে তানিয়া গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়েছে। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাতো। এ বিষয়ে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

আজাদ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!