যেমন বাস তেমন যাত্রী, চট্টগ্রামে স্টপেজে দাঁড়ায় না কেউ

আড়ালে হাসে সাইনবোর্ডের বাণী!

চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ একের পর এক পদক্ষেপ নিলেও সড়ক শৃঙ্খলায় দৃশ্যত কোন পরিবর্তন আসেনি। সম্প্রতি যানজট নিরসনে নগরীর ১৩ রুটে প্রায় ২৭১টি স্পটে ‘বাস স্টপেজ’ নির্ধারণ করে দেয় ট্রাফিক বিভাগ। এছাড়াও নগরজুড়ে ‘গাড়ি এখানে থামিবে না’ সংবলিত সাইনবোর্ড ঝোলানোর পরও এসব নির্দেশনা মানছে না কেউ।

স্টপেজে বাস না থামার পেছনে বাসচালকেরা যাত্রীর ওপর, যাত্রীরা চালকের ওপর আর পুলিশ অনভ্যস্ততার ওপর দায় চাপিয়েছেন। চালকেরা বলছেন, যাত্রীরা নির্ধারিত জায়গা দাঁড়ান না। তারা নিজেদের সুবিধামতো জায়গায় উঠতে-নামতে চান। আর যাত্রীদের ভাষ্য, চালকেরাই নির্ধারিত স্টপেজে থামতে চান না।

ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক এবং ব্যস্ততম মোড় বিবেচনায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এসব স্পটে সাঁটা হয়েছে সাইনবোর্ড। সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টরা বলছেন, যাত্রী ও চালকদের কিছুতেই শৃঙ্খলায় আনছে না সাইনবোর্ডে লেখা এসব নিয়ম-নীতি। এদিকে ঢালাওভাবে ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। সঠিক স্থানে যাত্রীদের বাসে ওঠা-নামার অনুরোধ করলে তারা দায়ী করছেন চালকদের নির্দিষ্ট স্থানে না থামানোকে। অন্যদিকে চালকদের নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামানোর জন্য সতর্ক করা হলে তারা বলছেন, যাত্রীরা নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ায় না।

নগরীর সড়কজুড়ে এমন নিষ্ঠুর বাস্তবতায় বেহাল দশা নেমে এসেছে সড়ক-শৃঙ্খলায়। ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

চট্টগ্রাম স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং এর প্রতিনিধিরা বলছেন, ‘যাত্রীদের মধ্যে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের বদঅভ্যাস সহজেই পরিবর্তন হচ্ছে না। কঠোর আইনের প্রয়োগ ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।’

সংগঠনটির সমন্বয়ক মিনহাজ চৌধুরী রিফাত চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাপ্তাহিক রুটিন করে আমরা জনসচেতনতার কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু সচেতনতা তৈরির কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। অন্য দিকে কোন এক অদৃশ্য কারণে সড়কের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারছে না ট্রাফিক।’

সংগঠনটির সদস্য সাজ্জাদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘প্রতি শনিবার আমাদের সংগঠনের সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে সচেতনামূলক প্রচারণাসহ শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কাজ করে থাকি। সড়কের শৃঙ্খলায় ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে।’

এসব বিষয়ে সিএমপি উত্তর বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সড়ক আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নগর ট্রাফিক বিভাগ। যাত্রী ওঠা-নামার জন্য নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবেই এসব নির্দেশনা অমান্য করছে যাত্রী ও চালকরা। তবে শীঘ্রই শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!