যুবলীগ চেয়ারম্যানের সেই ক্যাশিয়ারের খোঁজে গোয়েন্দারা

ক্যাসিনো কাণ্ডে কোণঠাসা যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর চট্টগ্রামের ক্যাশিয়ারের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে। এরআগে ঢাকায় তার ঘনিষ্ট যুবলীগের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর নতুন করে আলোচনায় আসা যুবলীগের ওই নেতার বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ‘কমিটি বাণিজ্য/চট্টগ্রামে যুবলীগ চেয়ারম্যানের ক্যাশিয়ার কে?’ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে অভিযোগকারী যুবলীগের সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ রানার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন যুগ্ম সম্পাদক ক্যাশিয়ারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তার কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সরকারে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তারাও চট্টগ্রাম প্রতিদিনের প্রতিবেদক ও যুবলীগ নেতা রানার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন।

জনাতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ রানা বলেন, ‘যুবলীগ চেয়ারম্যানের চট্টগ্রামের ক্যাশিয়ারের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অনেক আওয়ামীলীগ নেতা বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। যুবলীগ চেয়ারম্যানসহ ওই ক্যাশিয়ারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন তারা।’

এরআগে মঙ্গলবার প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ রানার সাম্প্রতিক দেওয়া একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকজুড়ে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ওমর ফারুক চৌধুরীর ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন চট্টগ্রামের যুবলীগের এক নেতা। তার মাধ্যমেই কমিটি বাণিজ্য থেকে শুরু করে টেন্ডার-তদবিরসহ সব লেনদেনই করতেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।

যুবলীগের সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ রানা স্পষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ না করলেও খোঁজ নিয়ে ওমর ফারুক চৌধুরীর ক্যাশিয়ার হিসেবে যার দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি যুবলীগের চট্টগ্রামের একটি সাংগঠনিক ইউনিটের শীর্ষ নেতা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি প্রথমবারের মত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। মূলত তার মাধ্যমেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগ, মহানগর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠিত হয়েছে এমন অভিযোগ বেশ কয়েকজন যুবলীগ নেতার।

২০১৩ সালে মহানগর কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কসহ বিভিন্ন পদে আসতে প্রায় দুই কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পেতেও ওই ক্যাশিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা সংশ্লিষ্ট মহল জ্ঞাত।

যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত কথিত যুবলীগ নেতা জি কে শামীম চট্টগ্রামে যেসব প্রকল্পের টেন্ডার পেয়েছিলেন তার সবকটিতেই ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রভাব ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সেখানেও চেয়ারম্যানের হয়ে কাজ করেছেন ক্যাশিয়ার-খ্যাত ওই যুবলীগ নেতা।

এছাড়াও কথিত আছে, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চুর সঙ্গে চেয়ারম্যানের সখ্যের কারণে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এখনও স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। এমনকি নগর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা আলতাফ হোসেন বাচ্চুকে নগর যুবলীগের কমিটি গঠনের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বও দেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
অন্যদিকে, চেয়ারম্যানের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হয়েও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদকের পদে বসানো হয়েছে জাফর আলমকে।

এডি/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!