ম্রো ভাষায় আগে থেকে কিছু বইপত্র থাকলেও এই ভাষার ব্যাকরণ কখনও ছিল না। এবার সেই শূন্যতাও পূরণ হল ম্রো সম্প্রদায়ের নিজেদের ভাষায় লেখা প্রথম ব্যাকরণ বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে। ১৯৮৪ সালে ম্রো ভাষার বর্ণমালা আবিষ্কার হয়। ম্রো সম্প্রদায় মূলত বান্দরবানেই বসবাস করে থাকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবান শহরের উজানি পাড়ায় লেখক ইয়াঙান ম্রোর বাসভবনে ব্যাকরণ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ম্রোদের ক্রামা ধর্মের প্রধান শিষ্য লেংয়াং ম্রো।
ব্যাকরণ বইটির লেখক ইয়াঙান ম্রো ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যভাষা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করার পর ম্রোদের সমাজ-সংস্কৃতি নিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। ইতিমধ্যে তার ১৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে— যার মধ্যে ম্রো ভাষায় লেখা হয়েছে আটটি বই।
ইয়াঙান ম্রো বলেন, এ বইয়ের মাধ্যমে ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন শুদ্ধভাবে তাদের ভাষায় লিখতে ও পড়তে পারবে। বিশেষ করে ম্রো শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ বোঝার জন্য বইটি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রথম প্রকাশিত হিসেবে ব্যাকরণ বইয়ের ভুলত্রুটি ও অসম্পূর্ণ থাকতে পরে। তবে তা পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করা হবে বলে জানান লেখক।
এই লেখক জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চশ শ্রেণিতে পড়ার সময় এক স্কুল পরিদর্শকের ইংরেজি বাক্যের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। তখন ওই ইংরেজি বাক্য বুঝতে না পেরে কোনও উত্তর দিতে পারেননি। তবে ওই সময় থেকে ম্রো ভাষায় ব্যাকরণ বইয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন তিনি।
ইয়াঙান ম্রো বলেন, ব্যাকরণ বইটি লিখতে বিভিন্ন সময় ম্রো সম্প্রদায়ের বিশিষ্টজন ও ম্রো ভাষার শিক্ষকদের মতামত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাকরণ বইটি ম্রোদের নিজস্ব নিয়মে লেখা হয়েছে।
ম্রো ভাষার শিক্ষক ঙানসিং ম্রো বলেন, ১৯৮৪ সালে ম্রো বর্ণমালা আবিষ্কারের পর তাদের হাতে লিখে লিখে বর্ণমালা পড়ানো হতো। এখন নিজেদের ভাষায় বই আকারে ছাপা হলো। এর ফলে এখন থেকে বইটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ম্রো ভাষা আরও শুদ্ধভাবে লিখতে ও পড়তে পারবে।
সিপি