ডিজিটাল মানচিত্রে চট্টগ্রামের পোশাকশিল্পের খুঁটিনাটি

বাংলাদেশের সকল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার কিছু সাধারণ তথ্য একটি ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় আনার লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’। সিঅ্যান্ডএ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ‘সেন্টার ফর এন্টারপ্রেনরশিপ ডেভেলপমেন্ট’ ও ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম জেলার তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ গত সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রামের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ও সহায়তায় চট্টগ্রাম জেলার সকল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই প্রকল্পে লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আনুষ্ঠানিক সমর্থন পেয়েছে।

জানা যায়, ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয় এবং ২০২১ সালের জুনে সমাপ্ত হবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত হওয়া এই মানচিত্রটি তৈরি পোশাক খাত নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ডিজিটাল মানচিত্র। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের সকল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প কারখানাগুলোকে একটি ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রগতিশীল তৈরি পোশাক খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার সক্ষমতার বিস্তৃত এবং যথাযথ তথ্য ভাণ্ডার প্রদান করবে; যেখানে অন্তর্ভুক্ত হওয়া তথ্যের মধ্যে থাকবে কারখানার নাম, অবস্থান, শ্রমিক সংখ্যা, উৎপাদিত পণ্যের ধরণ, পণ্য রপ্তানির দেশ, কারখানার সনদ এবং কারখানার সাথে কাজ করা প্রধান বায়ারস ও ব্র্যান্ডের নাম।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর পাশাপাশি চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলোতে যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে; তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে এই প্রকল্প সুদূর প্রসারী ভূমিকা রাখবে। তৈরি পোশাকের অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অনুরূপ এই প্রল্পের ও সার্বিক সহযোগিতায় বিজিএমইও কাজ করবে।’

প্রকল্পটির দৃশ্যমান সফলতা প্রত্যাশা করে বিকেএমইএ এর পরিচালক মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী বলেন,‘বন্দর নগরী চট্টগ্রামের পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি পোশাক উৎপাদনে চট্টগ্রামের সক্ষমতা কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়— তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ফ্যাক্টরির ব্যবসায় সম্প্রসারণের সাথে সাথে সরকার, নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক এবং সামাজিক সংগঠনের কাছে এই মানচিত্রে প্রদত্ত তৈরি পোশাক শিল্পের বিস্তারিত এবং অন্যান্য তথ্যাবলী সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তৈরি পোশাক শিল্পের অর্জনসমূহ এখানে প্রদর্শন করা যাবে।

জানা যায়, এর আগে এই প্রকল্পের অধীনে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো জরিপ করা হয়েছে। ঢাকা জেলার তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোর প্রকাশিত তথ্য নিয়ে এই ডিজিটাল মানচিত্রটি ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী।

উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম থেকেই গোড়াপত্তন হয়েছিল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি। চট্টগ্রাম জেলায় তৈরি পোশাক শিল্পের প্রায় ৪০০টি কারখানা রয়েছে।

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!