মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকে ঠাসা কক্সবাজার

পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড় শুরু হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে কয়েক লাখ পর্যটক রাত্রিযাপন করছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায়।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, পাথুরে ইনানী সৈকত, পাহাড়ি ঝরনা হিমছড়ি, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামু বৌদ্ধ মন্দির, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়াদ্বীপ, চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, কুতুবদিয়ার সৌরবিদ্যুৎসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়েছে পর্যটক।

এদিকে পর্যটকের আগমন শুরু হওয়ায় পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মধ্যে খুশির আমেজ শুরু হয়েছে। তারা বলছেন, শুক্রবার থেকে পর্যটন এলাকার সব হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজগুলোতে পরিপূর্ণ ছিল পর্যটক। পাশাপাশি রেস্টুরেন্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসাও ভালোভাবে জমে উঠেছে।

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘পর্যটকের এ আগমন ধারাবাহিকভাবে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটায় ব্যবসায়ীরা খুবই খুশি। পর্যটন এলাকার হোটেলগুলো শুক্রবার থেকে প্রায় সব রুম বুকিং আছে।’

মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকে ঠাসা কক্সবাজার 1

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি এবার ব্যবসা ভালো হবে। কারণ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারের প্রশাসন পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ সচেতন আছে।’

একইভাবে হোটেল মালিক আবদুস সবুর বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা এ সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ সারাবছর কম- বেশি ব্যবসা হলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু পর্যটন মৌসুম। এ মৌসুম শুরু হলে ব্যবসায়ীদের পেছনে ফেরে থাকাতে হয় না। পর্যটকদের আগমন যদি মার্চ মাস পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকে তাহলে কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা স্বস্তি পাবে।’

পর্যটকদের ব্যাপারে কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডালিম বলেন, ‘আমাদের সমিতির প্রত্যেক রেস্টুরেন্ট মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হয়। কোনো খাবারের দাম যেন বেশি রাখা না হয় বা অন্যকোনভাবে যেন পর্যটকরা মনখারাপ না করেন।’

কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রায় চার শতাধিক ছোট বড় হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউজ ও কটেজ রয়েছে। সবাই এখন পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত।’

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘মূলত সারাবছর কর্মব্যস্ততার মধ্যে কাটে। ডিসেম্বর মাসটা শুরু হলে ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা শেষে স্কুল বন্ধ হয়। যে কারণে এ সময়টার জন্য অপেক্ষ করে থাকি। বছরের শেষে পরিবার-পরিজন নিয়ে ২-৩ দিন সময় কক্সবাজারে কাটাতে পেরে বেশ আনন্দ লাগছে।’

একইভাবে আরও বেশ কয়েকজন পর্যটক জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ন্যায় আলাদাভাবে পাথুরে বীচ ইনানী, পাহাড়ি ঝরনা হিমছড়ি, মেরি ড্রাইভ সড়ক, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামু বৌদ্ধ মন্দির, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়াদ্বীপ, চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, কুতুবদিয়ার সৌর বিদ্যুৎসহ আরও কয়েকটি পর্যটন স্পটের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পেরে বেশ আনন্দিত তারা।

এদিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোছাইন বলেন, ‘পর্যটন মৌসুম উপলক্ষে কক্সবাজার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন মাথায় রেখে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেন জেলার কোনো পর্যটন স্পটে কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হয়।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!