৪ দেশ ঘুরে মোটরসাইকেলে ওমরাহ পালনে চট্টগ্রামের তরুণ

পাড়ি দিলেন ১৩ হাজার কিলোমিটার পথ

চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে মোটরসাইকেলযোগে ওমরাহ পালন করতে যাচ্ছেন হাটহাজারীর ভ্রমণপ্রিয় তরুণ মাসদাক চৌধুরী। সফরের অংশ হিসেবে এখন তিনি আছেন আবুধাবীতে। দুঃসাহসিক এই ভ্রমণে তার সঙ্গী চট্টগ্রাম নাম্বারপ্লেটের একটি মোটরসাইকেল।

ওমানের সোহারে জন্ম নেওয়া চট্টগ্রামের এই তরুণ ইতিমধ্যে ১৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছেন। নিছক সাদামাটা ভ্রমণ নয় এটি। সঙ্গে আছে লাল-সবুজের বাংলাদেশের চিহ্নবাহী শ্লোগান— ‘রাইড ফর দ্য নেশন’।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় পৌঁছান মাসদাক চৌধুরী। ভারত থেকে সড়কপথে ২ হাজার ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ৭ অক্টোবর পৌঁছান ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ওয়াগ্গা সীমান্তে। ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে ঢোকার পর তিনদিন ছিলেন লাহোরে। কিন্তু পাকিস্তানে তার রাইডিং পার্টনার আবু সাঈদের ভ্রমণসংক্রান্ত কাগজপত্র সম্পন্ন না হওয়ায় আবার বাংলাদেশে ফিরে আসেন মাসদাক। এরপর ৯ ডিসেম্বর আবার একইভাবে পাকিস্তান এসে দুজন মিলে শুরু করেন মূল অভিযান।

৪ দেশ ঘুরে মোটরসাইকেলে ওমরাহ পালনে চট্টগ্রামের তরুণ 1

দুর্গম সব পথ-প্রান্তর পাড়ি দিয়ে এ অভিযান চলতে থাকে। দিনে গড়পড়তা ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সফর করেছেন তারা। পাঁচটি দেশের মধ্য দিয়ে সফরের পরিকল্পনা থাকলেও সে সময় ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় পাঞ্জাব-খাইবার পাখতুন-দক্ষিণ বেলুচিস্তান হয়ে ইরানে প্রবেশ করার পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া বাঁধে আরেক বিপত্তি। অভিযানের সঙ্গী আবু সাইয়ীদের বাবা অসুস্থ হলে তিনি পাকিস্তান ফিরে যান।

তবে মাসদাক একাই তার অভিযান অব্যাহত রাখেন। করাচি ফিরে সেখান থেকে দুবাইয়ে বাইকের শিপমেন্ট করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিমানযোগে প্রবেশ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশ ঘুরে আবুধাবি থেকে গত ৬ মার্চ সৌদি আরবের সিলা বর্ডারে পৌঁছান। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় মাসদাক আবার ফিরে আসেন আবুধাবিতে। এখনও তিনি আবুধাবিতেই অবস্থান করছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হলে সৌদি আরব যাবেন।

‘রাইড ফর দ্য নেশন’ শ্লোগানের এ অভিযাত্রায় বাংলাদেশে দুই দিনে তিনি সফর করেছেন ৪৯৫ কিলোমিটার, ভারতে ৯ দিনে ২ হাজার ২৫০ কিলোমিটার, পাকিস্তানে ২ মাসে ৭ হাজার ৮০ কিলোমিটার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ।

মোটরসাইকেলে কেন এই অভিনব ভ্রমণ? মাসদাক বললেন, ‘আমি একজন মোটর ট্রাভেলার ও বাইক লাভার। আমার আগে বাংলাদেশের কেউ নিজস্ব মোটরবাইকে এতগুলো দেশ সফর করেননি। তাছাড়া বাইকে ট্রাভেল করলে কোন বাইন্ডিংস থাকে না, ম্যাক্সিমাম ফ্রিডম থাকে। ডিফারেন্ট রোড কন্ডিশনে ট্রাভেল করা যায়। বাইকে ট্রাভেল করা ইকনোমিক। এসব কারণে বেসিকলি আমি বাইকে ট্রাভেল করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!