মোছলেমের এক নৌকায় সাতজনের স্বপ্নডুবি!

চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমদের মনোনয়নের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না আওয়ামী লীগের হয়ে ফরম নেওয়া সাতজনই। নির্বাচন কমিশন থেকে ফরম কিনলেও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তাদের নির্বাচন করার সুযোগ থাকছে না।

তবে নির্বাচন কমিশন থেকে মাত্র ৭ জন মনোনয়ন ফরম নিলেও দলীয় ফরম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নিয়েছিলেন মোট ১৯ জন। এর মধ্যে ছিল একেবারে আনকোরা মুখও, যা নিয়ে এলাকায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

নৌকার প্রার্থী মোছলেম উদ্দীন আহমদ ছাড়াও নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, তার ছেলে মুজিবুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, ব্যারিস্টার এসএম কফিল উদ্দিন, প্রয়াত সাংসদ মইনউদ্দীন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদল, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ ও নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম।

আওয়ামী লীগের ৭ মনোনয়ন প্রত্যাশী আর নির্বাচন করার সুযোগ না পেলেও আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে স্বতন্ত্র ও অন্য দলের কে কে মনোনয়ন ফরম জমা দিচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য।

এখনও নির্বাচনী দৌড়ে আছেন বিএনপির আবু সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির জিয়া উদ্দিন আহমদ বাবলু ও কামাল উদ্দীন তালুকদার, ন্যাপের বাপন দাশ গুপ্ত, স্বতন্ত্র থেকে এম. মোরশেদ খান, মোহাম্মদ এমদাদুল হক, বিএনপির এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের এসএম আবুল কালাম আজাদ, গণফ্রন্টের উত্তর কুমার চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) শূন্য আসনে উপ নির্বাচন হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে ইভিএমে। ১ ডিসেম্বর বিকালে নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর তফসিল ঘোষণা করেন। আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ১৫ ডিসেম্বর যাচাই বাছাই শেষে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে।

মইন উদ্দীন খান বাদল গত ৭ নভেম্বর ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত ২০০৮ সাল থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে ২৮৫/চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ইসি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম ৮ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়ন, পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন, পূর্ব গোমদন্ডী ইউনিয়ন, শাকপুরা ইউনিয়ন, সারোয়াতলী ইউনিয়ন, পোপাদিয়া ইউনিয়ন, চরণদ্বীপ ইউনিয়ন, আমুচিয়া ইউনিয়ন ও আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৮। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯২২ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪ জন। বোয়ালখালী উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার। কেন্দ্র সংখ্যা ১৮৯টি।

জানা যায়, স্বাধীনতাত্তোর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে সাংসদ হন আওয়ামী লীগের মরহুম এম কফিল উদ্দিন, দ্বিতীয় সংসদে সিরাজুল ইসলাম, তৃতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির মনজুর মোরশেদ খান, চতুর্থ সংসদে বিএনপির সিরাজুল ইসলাম, পঞ্চম সংসদে বিএনপির সিরাজুল ইসলাম, ৬ষ্ঠ সংসদে জাতীয় পার্টির হয়ে, ৭ম ও ৮ম সংসদে বিএনপির হয়ে মনজুর মোরশেদ খান সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর থেকে টানা নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের শরীক জাসদের সাংসদ নির্বাচিত হন মইন উদ্দীন খান বাদল।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!