‘মেয়ে-মেয়ে বাজাবাজি হতেই পারে, ডাজ নট এ ম্যাটার’

বন্দরটিলায় তরুণী মারধরের ঘটনা

চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকায় ঘরে গিয়ে এক তরুণীকে মারধরের ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের একজন সিমরান সিমি এই বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লাইভ ভিডিওতে এসে অধরা আহমেদকে বাড়িতে গিয়ে মারধরের কথা স্বীকার করে নিলেও এই ঘটনায় দুই পক্ষের দায় আছে জানিয়ে একতরফা বিচার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন সিমি। এমনকি মেয়ে-মেয়ে এমন মারামারির ঘটনা ‘কোন ব্যাপারই না’ বলেও এ সময় মন্তব্য করেন সিমি।

আলোচিত এই ঘটনায় অধরা আহমেদেরও দায় ছিল— এমন মন্তব্য করে সিমি বলেন, ‘কারও দোষ না থাকলে কেউ কাউকে এভাবে পেটায় না। আমি যদি দোষ না করি আপনি এমনি এমনি আমাকে মারতে আসবেন না। ও বলছে হ্যাডাম থাকলে আসিস। ইভেন আমাদেরকে মার্ডারের থ্রেট দিছে। আমাদেরকে বলা হইছে যে, ৫ হাজার টাকা দিলে তোদেরকে দুনিয়া থেকে তুলে দেবে।’

মারধরের ভিডিও ছাড়া অধরার কাছে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো প্রমাণ নেই এবং এমন ঘটনা ঘটতেই পারে দাবি করে সিমি বলেন, ‘ওর কাছে কোনো প্রমাণ নেই। প্রমাণ একটাই আমরা মারপিট করছি। আমরা তো আর কোন খারাপ কাজে অবৈধ কাজে ধরা পড়ি নাই— যার কারণে আমাদের মানসম্মান ইয়ে হবে। আমরা মারপিট করছি। মেয়ে-মেয়ে বাজাবাজি হতেই পারে। ডাজ নট এ ম্যাটার।’

সিমি আরও বলেন, ‘আমি এই মাত্র ইপিজেড থানা থেকে আসছি। থানায় ওর মামলা নেওয়া হয় নাই। কারণ থানায় বলা হইছে যে মেয়ে-মেয়ে মারপিট করছে এখানে আমরা কিছু করতে পারবো না।’

নিজেকে ‘স্থানীয়’ ও অধরাকে ‘আউট ডিস্ট্রিক্ট’-এর মেয়ে উল্লেখ করে সিমি বলেন, ‘ও হচ্ছে আউট ডিস্ট্রিক্টের মেয়ে, আমি একটা স্থানীয় মেয়ে। হ্যাঁ আমার দোষ ছিল, প্লাস ওরও দোষ ছিল। দুজনেরই দোষ ছিল। ও একলা মাইর খায় নাই। আমি যখন ওকে মারছি ও আমার চুল ধরে মারামারি করছে। প্রশাসন আর মিডিয়ার কাছে আমার অনুরোধ একতরফা যেন বিচার না হয়।’

অধরা নিজেকে এখন যেভাবে অসহায় দাবি করছে— তার যৌক্তিকতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে সিমি বলেন, ‘ও আজকে অসহায় সাজছে ওর পাশে কেউ নাই। কেন ও তো সব সময় হ্যাডাম দেখায়। আমার এই আছে, আমার সেই আছে। আমার কথা হচ্ছে আমার লেভেল যতটুকু আমি ততটুকুতে থাকবো। আমি কেন ওপরের মানুষের সাথে পাঙ্গা নিতে যাব?’

এই ঘটনায় পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মানসিক চাপে আছে জানিয়ে লাইভে বারবার সুইসাইড করার কথাও বলতে শোনা যায় সিমিকে। সিমি বলেন, ‘আপনারা অনেক মজা নিচ্ছেন, বাট রিয়েল ঘটনা কী আপনারা আসলে জানেনই না। আমি একটা পিক আপলোড করছি। সেখানে সে খারাপ কমেন্ট করছে। যার কারণে বাধ্য হয়ে আমাকে যেতে হইছে।’

এছাড়া অধরার ঘরের সামনে যে মারামারির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তার আগে ওই বাসার গলির সামনে অধরা কয়েকটা ছেলে দিয়ে তার এক বান্ধবীকে পিটিয়েছে বলেও লাইভে অভিযোগ করেন সিমি।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকার কসাই গলিতে এক তরুণীকে কয়েকজন কিশোর-কিশোরী মারধর করছে— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সেই ভিডিওর সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালানোর পর জানা গেছে, অনলাইনে কিশোর গ্যাং কালচারের বিরোধের জের ধরে অধরা আহমেদ (২২) নামের এক তরুণীকে তার বাসায় ঢুকে বেধড়ক মারধর করে পাঁচ কিশোর-কিশোরীর একটি দল। পরে হামলাকারী ওই দলটিই ‘শিক্ষা দিতে’ মারধরের ঘটনা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে।

মারধরের শিকার ওই তরুণী অভিযোগ করেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শাখাওয়াত নামের এক কিশোরের নেতৃত্বে শাখাওয়াতের দুই বন্ধু শাওন (২২) ও আরেফিন (২২) এবং দুই বান্ধবী সিমরান সিমি (১৮) ও তানিয়া (১৭) তার ওপর হামলা চালায়।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!