মেয়র নাছিরের বিদায়বেলায় ৮১৪ কোটি টাকা দেনার বোঝা

৮০০ কোটি দেনা রেখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। ৫ বছর আগে তিনি যখন মেয়রের চেয়ারে বসেছিলেন সে সময় সিটি করপোরেশনের দেনা ছিল মাত্র ২৮৫ কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ করে যখন পদ থেকে তিনি সরতে যাচ্ছেন, তখন দেনার পরিমাণ ঠেকেছে ৮১৪ কোটি ২০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

বিশাল এই দেনার মধ্যে ঠিকাদারদের পাওনাই ৭০০ কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাবেন প্রায় ১০০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামী ৪ আগস্ট মেয়র পদ থেকে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অব্যাহতি নেওয়ার কথা রয়েছে। ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়রের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে। এরপর চসিকের দায়িত্ব যাচ্ছে প্রশাসকের হাতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে চসিকের হিসাব বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আ জ ম নাছির উদ্দিন যখন মেয়র পদে বসে ছিলেন তখন করপোরেশনের আড়াইশ কোটি দেনার কথা তিনি বড় গলায় বলেছিলেন। এখন সেই দেনাকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকায় রেখে তিনি নগর ভবন ছাড়বেন। নগর ভবনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেনশন-গ্রাচুয়েটিসহ নানা ধরনের ভাতাও প্রায় ১০০ কোটি টাকা বাকি রেখে যাচ্ছেন তিনি। অথচ আগের কোনো মেয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাকা বাকি রাখেননি। এতে অবসরে যাওয়া কর্মীরাও মেয়রের ওপর ক্ষিপ্ত।’

চসিক সূত্র জানায়, ৮১৪ কোটি ২০ লক্ষ ৫০ হাজার পাওনার মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের ম্যাচিং ফান্ড ৩৮৬ কোটি টাকা, থোক বরাদ্দ ও সাধারণ বরাদ্দ বাকি রয়েছে ২৮৭ কোটি ৯৫ লাখ ৪১ হাজার ৯৫০ টাকা, আইসিসি ক্রিকেট প্রকল্পের ১১ কোটি ও এডিপি ( চট্টগ্রাম মহানগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প) এর ১৫ কোটিসহ সিডিএমপি বহদ্দারহাট প্রকল্প, সিডিএমপি মহেশখাল প্রকল্প, গার্বেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প, বাণিজ্যিক রাজধানী প্রকল্প এ সাতটি প্রকল্পের ৩১ কোটি ৩২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৮ টাকা।

অন্যদিকে চসিকের ৩৩২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৮০ মাসের আনুতোষিক ৪৫ কোটি ৬ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা এবং ভবিষ্য তহবিল ৩৮ কোটি ৯৭ লাখ ৬৭ হাজার ২২২ টাকা। চসিকের সড়ক বাতির বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৩ কোটি ৫৪ লাখ ১৬ হাজার ৮০৯ টাকা বকেয়া। এছাড়া পটিয়া ও কর্ণফুলী খেয়াঘাট ও ফেরীঘাটেরও ১৩৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

প্রকল্প ও বিভিন্ন তহবিলে টাকা পরিশোধ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য (হিসাব ও নিরিক্ষা) কাউন্সিলর মোবারক আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিগত মেয়র মঞ্জু সাহেবের আমল থেকেও কিছু টাকা বাকি ছিল। চসিকের রাজস্ব আদায় কম হয়, তাই ফান্ডের স্বল্পতা লেগেই আছে। যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়, তাতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতাও হয় না। এছাড়া উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে বাকি পাওনা টাকাগুলো পরিশোধ করা যেতো।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!