মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ কারাগারে

পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস, পরিদর্শক লিয়াকতসহ আত্মসমর্পন করা সাত আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। তাদের জমিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন। আত্মসমর্পনকারী আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং এএসআই লিটন মিয়া।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত পুলিশ সদস্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করেন তারা। সাত পুলিশ সদস্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট রাখাল মিত্র ও মো. জকরিয়া জামিনের আবেদন করা হলেও তা নামঞ্জুর করে তাদের কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মোস্তফা। মামলার বাকি দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। তারা হলেন এসআই টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম বলেন, আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত আসামি। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। মামলার বাকি দুই আসামি পলাতক থাকায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।

এর আগে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করার পর বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) দুপুর ২ টায় চট্টগ্রামের দামপাড়া সিএমপি হেডকোয়ার্টার থেকে তাকে নিয়ে পুলিশের একটি বহর কড়া পাহারায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ওসি প্রদীপকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বিকেল ৫টার দিকে কক্সবাজার আদালতে পৌঁছায় পুলিশ। এসময় ওসি প্রদীপ স্বাভাবিকই ছিলেন। এর আগেই বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার সাত আসামিকে আদালতে নেয়া হয়। আসামিদের আদালতে হাজির করার আগে পুরো এলাকায় নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা। সাংবাদিকদের পাশাপাশি আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন বিপুলসংখ্যক উৎসুক জনতা।

প্রসঙ্গত, বুধবার (৫ আগস্ট) গত রাতেই চট্টগ্রাম চলে আসেন ওসি প্রদীপ এবং রাত থেকেই নগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে সিএমপি সদর দপ্তরে অবস্থিত পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

আগেরদিন কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বুধবার (৫ আগস্ট) রাত ১০টায়। মেজর সিনহার বোনের করা মামলাটি থানায় রাতেই নথিভুক্ত হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলাটি থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার বর্তমান ওসি এসবি দোহার সঙ্গে একাধিক যোগাযোগেও চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ৩১ জুলাই (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!