মুখ বেঁধে ২ ছাত্রকে বলাৎকার, আওয়ামী লীগ নেতা ধরা সহযোগীসহ

দশম শ্রেণির দুই ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম লালা (৪৮) ও তার সহযোগী নওশাদকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

লালা কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ফতেহ আলী সিকদারপাড়া গ্রামের আবদুস শুক্কুরের ছেলে। সহযোগী নওশাদ একই উপজেলার কৈয়ারবিল গ্রামের আবদুল মাবুদের ছেলে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আটককৃতদের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

অপরদিকে বলাৎকারের শিকার দুই ছাত্রকে একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনার শিকার এক ছাত্রের মা বাদি হয়ে শুক্রবার সকালে কুতুবদিয়ায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম লালা ও তার সহযোগী নওশাদ বৃহস্পতিবার সকালে কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই ছাত্রকে নানা প্রলোভনে উপজেলা গেইটের পাশে তার দোকানের পিছনের কক্ষে নিয়ে যান। একপর্যায়ে মুখ বেঁধে দুই ছাত্রকে বলাৎকার করেন। পরে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতিও প্রদর্শন করেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্ররা কান্নাকাটি করতে থাকলে সন্ধ্যায় তাদের ছেড়ে দেয়। সন্ধ্যায় বাসায় গিয়ে তারা পরিবারের কাছে আওয়ামী লীগ নেতার ‘নোংরা কর্মকাণ্ড’ খুলে বললে দুজনকে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

রাতেই পরিবারের লোকজন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা উপজেলা গেইটে এসে ওই নেতাকে দোকানে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম লালা ও তার সহযোগী নওশাদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

কুতুবদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অতীতে কুতুবদিয়ায় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। স্কুল ছাত্রদের বলাৎকারের খবর শোনার পর তাদের পরিবারের সাথে কথা বলে পুলিশের মাধ্যমে দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই অপরাধী আটক হয়েছে।’

কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর বলেন, ‘বলাৎকারকারী শেখ শহিদুল ইসলাম লালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে ঘটনা ঘটেছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে তারা আটকও হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। মিটিং শেষ করে তার বিরুদ্ধে কী দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানাতে পারব।’

কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ফেরদৌস বলেন, ‘বলাৎকারের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাসহ অপর একজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন ভিকটিম ছাত্রের মা। দুই ছাত্রকে একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!