মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার ঘটনায় ৪ পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

কক্সবাজারের চকরিয়ায় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙালির বসতঘরে হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ওসির অপসারণ এবং জামায়াত নেতা চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছারকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। শনিবার (৭ মার্চ) দুপুর ১২টায় লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের নিজ বাসভবন মুক্তিযোদ্ধা কুঠিরে পারিবারিকভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অপরদিকে, হামলার ঘটনায় প্রত্যাহার করা পুলিশের ১০ সদস্যের মধ্যে ৪ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের এডিশনাল এসপিকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সহধর্মিণী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নেচারা বেগমের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার বড় ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম।

বক্তব্যে দাবি করা হয়, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙালি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি চকরিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৩০ বছর কমান্ডার ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির উদ্যোগ নিলে আনোয়ার হোসেন বাঙালি বাদি হয়ে কক্সবাজারের ২০ জন মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলাটি অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার ঘটনায় ৪ পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত 1

লিখিত বক্তব্যে আরও দাবি করা হয়, ওই মামলায় ক্ষিপ্ত হয়ে যুদ্ধাপরাধী চক্র জামায়াত নেতা ও লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছারের মাধ্যমে পুলিশের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় পুলিশ সদস্যকে ম্যানেজ করে মুক্তিযোদ্ধা কুঠিরে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট ছাড়াও মারধরে পরিবারের ৭ সদস্যকে আহত করেছে। এছাড়া তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিও ভাংচুর করে। পুলিশের এ হামলার ঘটনায় পুলিশ দিয়ে নয়, বিচার বিভাগীয় কমিটি করে তদন্ত করার দাবি জানান। যেসব পুলিশ এ হামলায় জড়িত তাদের পাশাপাশি নির্দেশদাতা চকরিয়া থানার ওসিরও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে জামায়াত নেতা নাশকতাসহ বহু মামলার আসামি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছারকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হামলার নেপথ্য রহস্য উদঘাটিত হবে বলেও দাবি করা হয়।

এদিকে, গত ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার ঘটনায় ওইদিন রাতেই পুলিশের ১০ সদস্যকে চকরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার ব্যাপারে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো. মতিউল ইসলাম ও ডিএসবি’র এএসপি শহিদুল।

তদন্ত কমিটির প্রধান এডিশনাল এসপি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার রাতেই প্রাথমিকভাবে হামলায় জড়িত সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের চার সদস্যকে সাময়িক ববরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তুষ্ট লাল বিশ্বাস, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জেডাউর রহমার, কনস্টেবল মো. হারুনুর রশিদ (কং-৩৬৩) ও মো. নুর আলম (কং-৪২৬)।’

তিনি আরও বলেন, ঘটনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু হয়েছে। হামলায় যারা বা যতজনই জড়িত থাকুক না কেন সবাইকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। পার পাবে না কেউই।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!