মুক্তিপণের ১ লাখ টাকা না পাওয়ায় কিশোর মামাত ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা

২৫ দিন পর মাটির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার

আপন মামাত ভাইকে বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে কুমিল্লা থেকে বান্দরবানের লামা উপজেলায় এনে জিম্মি করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফুফাতো ভাই। কিন্তু টাকা না পেয়ে ১৭ বছরের কিশোর মামাতো ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করে একই বয়সী ফুফাতো ভাই আরিফ। নিহত কিশোরের নাম হাফেজ অলি উল্লাহ স্বাধীন।

হত্যার ঘটনাটি গোপন করতে খুনি ফুফাতো ভাই মাটি চাপা দেয় লাশ। ২৫ দিন পর মাটির নিচ থেকে নিহত হাফেজ মো. অলি উল্লাহ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করলে পুলিশ বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের কথা। নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের শিং ঝিরি এলাকায়।

এই ঘটনায় লামা থানা পুলিশ মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের বেতঝিরি হতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মূল দুই আসামি ফয়েজ আহমদ ও মো. আরিফুল ইসলামকে আটক করে। বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত ২টায় আসামিদের দেয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে খুনের ২৫ দিন পরে মাটির নিচ থেকে নিহত হাফেজ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নৃশংসভাবে খুন হওয়া মো. অলি উল্লাহ কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষুপুর গ্রামের মো. মোবারক হোসেন ও লুৎফা বেগমের ছেলে। খুনের ঘটনায় আটক দুই আসামি কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার খারাতাইয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে মো. ফয়েজ আহমদ (৩৮) ও নিহতের আপন ফুফাতো ভাই একই জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষুপুর গ্রামের মৃত মো. আব্দুল গণি খাঁর ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (১৭)।

নিহতের বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন সোহেল বলেন, গত ২২ মার্চ ছোট ভাই হাফেজ স্বাধীন ফুফাতো ভাই মো. আরিফুল ইসলামের সাথে বেড়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কয়েকদিন যাবৎ ছোট ভাইয়ের কোন খোঁজ খবর না পেয়ে আমরা গত ২৪ মার্চ কুমিল্লার বুড়িচং থানায় হারানোর জিডি করি। জিডির সূত্র ধরে তার মোবাইল নাম্বার ট্রেকিং করে আমরা লামা থানায় আসি। আমাদের দেয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে দুপুরে লামা থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামি ফয়েজ আহমদ ও আরিফুল ইসলামকে ফয়েজ আহমদের শ্বশুড় বাড়ি থেকে আটক করে।

আসামিদের দেয়া তথ্য মতে রাতেই অভিযানে বের হয় লামা থানা। আসামিদের দেখানো স্থানে রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে নিহত স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের দেয়া তথ্য মতে ও তাদের দেখানো স্থানে মাটি খুঁড়ে আমরা নিহত হাফেজ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করি। লাশটি সনাক্ত করেন নিহতের বড় দুই ভাই রিয়াজ উদ্দিন সোহেল ও মো. জিলানী বাবু। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতের পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কেএস/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!