মীর নাছিরের জামিন মিলেনি সুপ্রিম কোর্টেও

অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এই মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশ গত ৮ নভেম্বর মীর নাছির বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আত্মসমর্পণের পরে মীর নাছির আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) দায়ের করেন। একই সঙ্গে জামিনও চান।

রোববার (১৫ নভেম্বর) তার জামিনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগের আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।

২০০৭ সালের ৬ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাছির ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলালের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ একই বছরের ৪ জুলাই এক রায়ে মীর নাছির উদ্দিনকে আলাদা ধারায় তিন বছর ও ১০ বছরের দণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুই বছরের দণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া তার ছেলে মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক মাসের দণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আলাদা দুটি আপিল করেন।

হাইকোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছির উদ্দিনের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে দুদক। ২০১৪ সালের ৪ জুলাই দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে রায় দেয় আপিল বিভাগ। রায়ে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে দুর্নীতি মামলায় খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে মামলাটির আপিল আবেদন পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয়া হয়।

সেই অনুসারে হাইকোর্টে ওই আপিল দুটির পুনরায় শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর রায় দেন। রায়ে হাইকোর্ট তাদের আপিল খারিজ করে দেন। এতে মীর নাছিরের ১৩ বছর এবং মীর হেলালের তিন বছর সাজা বহাল থাকে। এছাড়া এ রায় বিশেষ জজ আদালত ঢাকা-২ যেদিন রিসিভ করবেন সেদিন থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়।

তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন ২৭ অক্টোবর ঢাকা যুগ্ম জেলা জজের আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। ৩ নভেম্বর চেম্বার জজ আদালতে আবার জামিন আবেদন করলে তিনি জামিন পেয়ে ৫ নভেম্বর কারামুক্ত হন।

মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বিএনপি-জামায়াত সরকারের বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ইতোমধ্যে এই মামলায় দুই বছর নয় মাস একদিন কারাভোগ করেছেন।

এফএম/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!