মিয়ানমার নয়, ইয়াবা আসছে ভারত থেকে

ইয়াবা এখন মিয়ানমার থেকে সরাসরি নয় ভারত হয়ে বাংলোদেশে আসে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।

তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অনড় অবস্থানের কারণে কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা প্রবেশের পরিমাণ কমেছে। ইয়াবা এখন মিয়ানমার থেকে ভারত হয়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, জয়পুরহাট ও দিনাজপুর জেলার সীমান্তপথ দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। জঙ্গি-সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানা গুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিয়মিত অভিযান আরো জোরদার করতে হবে।’

চট্টগ্রামে জেলা পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় হালিশহরের পুলিশ সিভিক সেন্টারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনাসহ রেঞ্জের ১১ জেলার পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।

মিয়ানমার নয়, ইয়াবা আসছে ভারত থেকে 1

ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক এসপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে সবাই যে যুদ্ধ করছেন, তার কিছুটা সুফল এসেছে। একসময় কক্সবাজার-টেকনাফ সীমান্ত দিয়েই মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসত। সেখানে পুলিশের বলিষ্ঠ ভূমিকায় টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আর তেমনভাবে আসছে না। আমাদের কাছে তথ্য আছে ইয়াবা এখন কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর জেলার সীমান্তপথ দিয়েে এদেশে ঢুকছে। মূলত ইয়াবা এখন ভারত হয়েই বাংলাদেশে ঢুকছে।’

সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ডিআইজি আরো বলেন, ‘জেলার এসপিদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গির বিরুদ্ধে যেভাবে জয়ী হয়েছি, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও অচিরেই জয়ী হতে পারব।’

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের টেকনাফে গত প্রায় এক বছরে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অন্তত শখানেক লোক নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই ইয়াবা পাচারকারী অথবা ব্যবসায়ী বলছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মিয়ানমারের সঙ্গে কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তপথকে ইয়াবা আসার মূল রুট হিসেবে দুই দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে আসছিল বলে জানান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সম্প্রতি সারাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামুলক কর্মসুচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে পুলিশের একজন নারী এসআইসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক মারা গেছে। একটু সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঘর-বাড়ি, থানা কম্পাউন্ড, পুলিশ লাইন্সের আঙিনা, ব্যারাক ও মেস সবসময় পরিস্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। অফিস-আদালতে থাকা ফুলের টব, অব্যবহৃত গাড়ি ও জমে থাকা স্বচ্ছ পানি অপসারণ করাসহ ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করতে হবে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিরোধী আন্দোলন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্তকরণ ও জনসচেতনতামুলক কর্মসুচি গ্রহণ করতে হবে।’

এদিকে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সাম্প্রতিক সময়ে গুজব প্রতিরোধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ‘গুজব প্রতিরোধে পুলিশ অতুলনীয় ভূমিকা রেখেছে। মাত্র তিনদিনের চেষ্টায় সারাদেশের গুজব রটনাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গুজব প্রতিরোধ করা হয়েছে। এখন আর গুজব নেই।’

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে জেলা পুলিশ লাইনের পুলিশ সিভিক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সভায় জুলাই মাসে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, পরোয়ানা তামিল, আলোচিত মামলার রহস্য উদঘাটন, আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় সাফল্যের জন্য ১৮ কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করেন ডিআইজি ।

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!