মিরসরাই জোরারগঞ্জ থানায় ১০ মাসে মাদক মামলায় ৩৫৫ গ্রেপ্তার

মিরসরাই প্রতিনিধি :

চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ গত ১০ মাসে ৩৫৫ জন মাদক কারবারি ও সেবনকারীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের অভিযানে মাদকের রাজ্য হিসেবে খ্যাত ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা করেরহাটে মাদক বেচাকেনা আগের থেকে কমে গেছে। তবে পুরোপুরি এই ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনের পাশাপাশি ও জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সচেতন লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবির।

মিরসরাই জোরারগঞ্জ থানায় ১০ মাসে মাদক মামলায় ৩৫৫ গ্রেপ্তার 1
মাদকের বিরুদ্ধে মিরসরাই জোরারগঞ্জ থানার অভিযানের ফাইল ছবি

জোরারগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্য আইনের বিভিন্ন ধারায় ২১৬টি মামলায় ৩৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল মাদকদ্রব্য। উদ্ধারকৃত মাদক দ্রব্যের মধ্যে ৫৩২০ লিটার চোলাই মদ, ৫২১৮ বোতল ফেনসিডিল, ৩২৮২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৩২ কেজি ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিএসআরএম গেটের সামনে থেকে একটি পিকআপে তল্লাশি চালিয়ে ৪২৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। ১ নভেম্বর ধুমঘাট ব্রিজের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলিসহ মো: রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করা হয়। ২৫ অক্টোবর বারইয়ারহাট ও ভাঙ্গা দোকান এলাকা থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা ও ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ তিনজনকে আটক করা হয়।
একই দিন বিভিন্ন মামলায় সাতজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। ৬ অক্টোবর ওয়ারেন্টভুক্ত ছয়জন, ২৪ অক্টোবর ছয়জন, ২৩ অক্টোবর এক বছর এক মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি দিদার আলমসহ তিনজন, ২২ অক্টোবর ১১ জন, ১৮ অক্টোবর ছয়জন, ১৬ অক্টোবর আটজন, ১৩ অক্টোবর তিনজন, ৯ অক্টোবর আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য মইজ্যাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মাদক মামলার আসামিদের মধ্যে সীমান্তবর্তী করেরহাট ইউনিয়নের লোক বেশি রয়েছে। মাদক কারবার ওই ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

 
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ মে ‘পুলিশই জনতা জনতাই পুলিশ’ এ শ্লোগান নিয়ে মিরসরাই উপজেলায় জোরারগঞ্জ থানা নামে নতুন একটি থানা সৃষ্টি হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে এই থানার যাত্রা শুরু হয়। উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট, ১ হিঙ্গুলী, ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ, ৪ নম্বর ধূম, ৫ নম্বর ওছমানপুর, ৬ নম্বর ইছাখালী, ৭ নম্বর কাটাছড়া, ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়ন ও বারইয়ারহাট পৌরসভা নিয়ে এই থানা গঠন করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার বিপুল দেবনাথ বলেন, মাদক মামলার আসামির পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়মিত মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। থানা এলাকার পরিস্থিতি আগের তুলনায় এখন অনেক ভালো রয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট জোরারগঞ্জ থানায় যোগদানের পর আমি মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রায় ৮০ ভাগ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। আমার কোনো অফিসার যদি মাদক মামলার আসামি ধরে ছেড়ে দেয় তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার কারণে কিছু মাদক প্রবেশ করে।

 

বিজিবি যদি তাদের দায়িত্ব পালনে আরো যত্নবান হয় তাহলে তাও রোধ করা সম্ভব। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যদি সহযোগিতা করেন তাহলে আমার থানাধীন এলাকায় মাদক একেবারে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারব।

ইলিয়াছ রিপন, মিরসরাই, চট্টগ্রাম।

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!