মিতু হত্যা : আসামিদের শনাক্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে এসপি বাবুল আকতারকে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে গভীর রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে কেন তাকে নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে সকাল পর্যন্ত মুখ খুলছেন’ না পুলিশের কোনো কর্মকর্তা।

13310613_1161657990564964_7429716565789088340_n

শেষ পর্যন্ত শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে মাদক বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

 

তিনি বলেছেন মিতু হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আসামির সামনে মুখোমুখি করে তাদের শনাক্ত ও জিজ্ঞাসাবদের জন্য বাবুল আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। খুব শিগগির মূল তথ্য সংবাদকর্মীদের জানানো হবে উল্লেখ করে অন্য কোন তথ্য এ মুহুত্বে জানায়নি তিনি।

 

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী বাবুল আকতারকে চট্টগ্রামেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ধারণা করে চট্টগ্রাম নগরীর সকল মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা ভিড় করে নগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে। সকলের ধারণা যেহতু আসামিরা চট্টগ্রামেই আছেন, সে ক্ষেত্রে তাকে চট্টগ্রাম আনা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

1459581498-300x200

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে তার শ্বশুর বাড়ি খিলগাঁও মেরাদিয়া ১২০ নম্বর বাসা থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি বিশ্বস্তসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাবুল আক্তারের শ্বশুরও পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

 

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য গতকাল বিকেলে জানিয়েছেন, মাহমুদার খুনে অংশ নেওয়া মোটরসাইকেল আরোহী তিন যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করছে না পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়াও কেন, কী কারণে ওই তিন যুবক হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে পুরো রহস্য উদ্‌ঘাটন করে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

 

এদিকে মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত সন্দেহে আবু মুছা (৪৫) ও এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দুই ব্যক্তিকে ইতোমধ্যেই আটক করেছে পুলিশের একটি ইউনিট। এরা দু’জনই এসপি বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাড়াটে খুনি হিসেবে তারা মিতুকে হত্যা করেছে অথবা সাহায্য করেছে। তাছাড়া মিতু হত্যায় যে অস্ত্রটি ব্যবহার হয়েছে, সেটি নাকি বাবুল আক্তরের সোর্স বিভিন্ন সময় ভাড়া দিতো।

 

এর মধ্যে আবু মুছা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবেও কাজ করেন। এসপি বাবুল আক্তারের হাতে একবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ভোলাও একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। এখন তিনি ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মামলা। বেশ কিছুদিন ধরে দু’জনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। আর এসব বিষয় নিয়েই ডিবি পুলিশ বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলবে বলেই জানা গেছে।

 

গত ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যদিও সবগুলো সংস্থা মিলে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার তেমন কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।

 

রিপোর্ট : রাজীব সেন প্রিন্স

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!